দুই দলের মতদ্বৈধতার কুফল ভোগ করছে দেশবাসী

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৪:১৫

আরিফুর রহমান

নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতদ্বৈধতার কুফল ভোগ করছে দেশবাসী। বিভিন্ন মহলের আহ্বান ও অনুরোধের পরও নিজ অবস্থান থেকে সরতে নারাজ দুই পক্ষ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক পথ নির্বাচনও বর্জন করে বিএনপি। কেবল বর্জন নয়, নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টায় নজিরবিহীন সহিংসতা চালায় তারা। সহিংস প্রতিরোধের ডাকের মধ্যেই নির্বাচন করে ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে আবারও সহিংস আন্দোলন শুরু করে বিএনপি জোট। পেট্রল বোমায় ঝলসে যেতে থাকে মানুষের জীবন, সম্পদ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় বহু মানুষ। এরপর এলো দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি। আবারও ভীত হতে শুরু করে দেশবাসী। এক বছর আগের অভিজ্ঞতায় জাগে উৎকণ্ঠা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় সব কর্মসূচি। একটি প্রাণও হারায়নি অনাকাক্সিক্ষত সহিংসতায়। দুই প্রধান দল একই দিন রাজধানীতে সমাবেশ করেছে, বিশৃঙ্খলা হলো না কোথাও। দুই দলের পক্ষ থেকেই এলো সমঝোতার ডাক। এটি রাজনীতির জন্য ইতিবাচক একটা দিক। কিছুটা হলেও সুবাতাস। খানিকটা হলেও স্বস্তি এসেছে দেশবাসীর মধ্যে। ভালো কিছুর আশা করছে সবাই। এই সুবাতাস অব্যাহত থাকুক। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনে দেশকে এগিয়ে নেবে সমৃদ্ধির দিকে, এটিই আমাদের আশাবাদ।

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দ- বহাল রেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গত ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকা-ের নীলনকশা বাস্তবায়নকারী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান নিজামীকে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মৃত্যুদ- দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। নিজামীর মতো একজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ দ- বহাল থাকুক এটাই ছিল জাতির প্রত্যাশা। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হবে আশা করি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে, জামায়াত-শিবিরচক্র যেন দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে।

৪ জানুয়ারি সোমবার ভোররাতে আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশ। দেশের প্রায় সব জায়গা থেকেই এ ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে ভূতত্ত্ববিদরা সতর্ক করে আসছেন। কিন্তু আমরা কতটা সতর্ক? নির্মাণ কাজে নিয়ম লঙ্ঘন ঘটছে অহরহ, ভূমিকম্প সহনীয় বাড়িঘর নির্মাণেও রয়েছে অনীহা। অপরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে নগর। ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর উদ্ধার তৎপরতায়ও আমাদের সক্ষমতা নাজুক। আমাদের এখুনি সতর্ক হওয়া দরকার।