ছোট ফেনী নদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের পুল
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের বেকের বাজার-আশ্রাফপুর সংযোগস্থলে কাটাখালি নদী হিসেবে পরিচিত ছোট ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে এলাকাবাসী। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি কর্তৃপক্ষের। ফলে ওই নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে ঝুঁিক নিয়ে পারপার হতে হয়।
সাঁকোটি জীর্ণ হয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বানাচ্ছেন কাঠের পুল।
এলাকাবাসী জানায়, ছোট ফেনী নদীর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ইকবাল মেমোরিয়াল কলেজ, মাতুভূঞা করিম উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়, মাতুভূঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াত করে দুই পারের বাসিন্দারা। এ ছাড়া মাতুভূঞা ও বেকের বাজারে যাতায়াত করে মমারিজপুর, আশ্রাফপুর, সালামনগর, ধর্মপুর, কৃষ্ণরামপুর, রামানন্দপুর, মমারিজপুর (একাংশ) গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ওপর ১১০ ফুট দীর্ঘ পুল নির্মাণে এলাকার কয়েকজন যুবক কাজ করছেন। বাঁশের পাশাপাশি প্রায় ১০ ফুট পরপর কাঠের খুঁটি ব্যবহার করা হচ্ছে পুল নির্মাণে। এর আগে স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে এখানে সাঁকো নির্মাণ করেন। তবে কাঠের খুঁটি কেনার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। গত সপ্তাহ খানেক ধরে চলছে পুল নির্মাণের কাজ।
স্বেচ্ছাশ্রমে পুল নির্মাণকাজে ব্যস্ত বেলাল হোসেন নামের একজন বলেন, ‘এ কাজ করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। কাঠের খুঁটি, কাঠের ছানি আর পাটাতন বসিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুলটি নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর এলাকার লোকজন বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটেছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্কুল-মাদরাসায় যেতে হয় ওই সাঁকো দিয়ে। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ভয়ে ভয়ে চলতে গিয়ে অনেক সময় অসতর্কতায় পড়ে গিয়ে জামাকাপড় ভিজে যায় তাদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান, একটি পুলের অভাবে যাতায়াতে এত দিন কষ্টের সীমা ছিল না এলাকার হাজারো মানুষের।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বেকের বাজার-আশ্রাফপুর সংযোগস্থলে ছোট ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পেতে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় দাবি জানিয়েছি। একইভাবে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এলাকাবাসীর এ উদ্যোগে আমি অভিভূত। এখানে সেতুর বিষয়ে ইতিপূর্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।’ আবার যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১অক্টোবর/মোআ)
মন্তব্য করুন