চাঁদপুরের লবণ মিলে ঘাম-লবণ একাকার

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:৪৮

শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারে ম্যানুয়েল পদ্ধতির লবণ মিলগুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে উৎপাদন করা হচ্ছে খাদ্য লবণ। নিম্নমানের এসব লবণ দীর্ঘদিন ধরে বাজারজাত হয়ে এলেও এ ব্যাপারে কোনো তদারকি নেই কারো। না প্রশাসনের, না ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংগঠনের।
শহরের পুরানবাজার মেসার্স বিসমিল্লাহ সল্ট, বিসমিল্লাহ প্লাস সল্ট ও মেসার্স জনতা লবণ মিল ঘুরে দেখা গেছে, সব কটি মিলে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে লবণ পরিশোধন করা হচ্ছে। দুই যুগের বেশি সময় ধরে এসব লবণ মিল সনাতন পদ্ধতিতে লবণ প্রস্তুত করে আসছে। এসব লবণে আয়োডিন যুক্ত করা হলেও পরিশোধিত পদ্ধতি সেই পুরনো।
সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, সব লবণ মিলেই শ্রমিকের ঘাম আর লবণ একাকার হচ্ছে। তাদের পরনে গামছা ছাড়া আর কিছু নেই। খোলা হাত-পা দিয়ে কাজ করছেন লবণ পরিশোধনে। তাদের শরীরের ঘাম পড়ছে পরিশোধ করা লবণে।
হাবিবুর রহমান ও আমজাদ হোসেন নামের দুজন শ্রমিক বলেন, তারা ২০ বছর আগে থেকে এ পদ্ধতিতে লবণ প্রস্তুত করে আসছেন। মালিকরা যেভাবে কাজ করার ব্যবস্থা করছেন, তারা সেভাবেই করছেন। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা লবণ পরিশোধনে কাজ করেন তারা।
পুরানবাজার মেসার্স বিসমিল্লাহ প্লাস সল্ট ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, ‘এক যুগের বেশি সময় ধরে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে লবণ উদপাদন করে আসছি। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে অটো পদ্ধতির মেশিন কেনার সামর্থ্য নেই।’ তাদের মিলের ভেতরে পরিবেশ ভালো বলে দাবি করেন তিনি।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাঁদপুর বিসিক শিল্পনগরীর লবণ পরীক্ষাগারের একজন কর্মকর্তা জানান, চাঁদপুরে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে যে লবণ প্রস্তুত করা হয়, তাতে আয়োডিন যুক্ত করা হলেও লবণে ময়লা থেকে যায়। এ কারণে ভোজ্য লবণ হিসেবে মানুষ চাঁদপুরের লবণ কম কেনে। লবণে আয়োডিন সঠিক পরিমাণে যুক্ত হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা ছাড়া পরিবেশ বিষয়ে তাদের কোনো কাজ নেই বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তারা এসব লবণ মিলের ব্যাপারে কোনো দিন খোঁজ নেননি। সংগঠনের দেবাশিষ সাহা  বলেন, চাঁদপুরে যে তিনটি লবণ প্রস্তুকারক মিল রয়েছে সেগুলো কখনো পরিদর্শন করিনি। যদি নোংরা পরিবেশে লবণ প্রস্তুত করা হয়, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ব্যাপারে জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা রেজাউল করিম ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘বছরখানেক আগে একটি লবণ কারখানাকে আমরা জরিমানা করেছিলাম। শিগগিরই এসব কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১অক্টোবর/মোআ)