ফেনীর রাজাপুর ইউপি: অস্থায়ী কার্যালয়ে ৪৪ বছর পার

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:২৮

আরিফ আজম, ঢাকাটাইমস

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের বয়স প্রায় ৪৪ বছর। কিন্তু এর স্থায়ী কোনো কার্যালয় নেই এখনো। এতে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদে কাজে আসা লোকজনেরও।

স্থানীয় সূত্র জানায়, যখন যিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, তখন তিনি তার পছন্দের জায়গায় অস্থায়ী কার্যালয় বসিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৭টি গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত রাজাপুর ইউনিয়নের জনসংখ্যা ৬১ হাজার ৩৬২।

ইউপি সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হায়দার চৌধুরী রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে একটি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করেন। সেখানেই চলত পরিষদের কার্যক্রম। ১৯৭২ সালের পর সে ভবনটি আর ব্যবহার করা হয়নি। বর্তমানে ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী। ভবনের দরজা-জানালা এমনকি ছাদও নষ্ট হয়ে গেছে। সংস্কারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ভবনটি। তা ছাড়া যে স্থানে ভবনটি তৈরি করা হয়েছে সেটি ওয়াকফ সম্পত্তি। ওই সম্পত্তি নিয়ে একাধিক মামলা চলছে।

ইউপি সচিব মো. শাহআলম জানান, রাজাপুর বাজারে একটি ভবনের দোতলায় পাঁচটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি কক্ষ ১০ ফুট বাই ১০ ফুট আকারের। প্রতি কক্ষের ভাড়া ৫০০ টাকা করে। তিনি জানান, সেখানে ভিজিডি ও ভিজিএফসহ কোনো ধরনের সহায়তার মালামাল রাখার গুদাম নেই।

স্থানীয় লোকজন জানান, ইউপির নির্দিষ্ট কোনো কার্যালয় না থাকায় এলাকার লোকজনকে কষ্ট পেতে হয়।

ইউনিয়নের পশ্চিম প্রান্ত জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবু আহম্মদ বলেন, ভিজিডি বা ভিজিডিএফের চালের জন্য যেতে হয় সাত কিলোমিটার দূরে রাজাপুর বাজারে। এতে লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেন, ইউনিয়নের মাঝামাঝি কোনো জায়গায় ইউপির কার্যালয় নির্মাণ করা হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে।

একজন ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাড়া করা ভবনে কোনো শৌচাগার নেই। এতে ইউনিয়ন পরিষদে কাজে আসা মানুষের কষ্ট হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান কাশেদুল হক বাবর ঢাকাটাইমসকে বলেন, বর্তমান ভাড়া করা ঘরে শালিস বৈঠকের জন্য স্থান সংকুলান হয় না। তিনি বলেন, সরকারি নীতি অনুযায়ী ইউপি ভবনের জন্য ২৫ শতক জমি দরকার। ওই ২৫ শতক জমি এলাকাবাসীকে দান করতে হবে। কিন্তু জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কেউ ইউপি কার্যালয়ের জন্য বাজার কিংবা সড়কের পাশে জমি দান করতে আগ্রহী নয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইউপি কার্যালয় নিয়ে সমস্যার সমাধানে আগেও একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এখন আবার উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, তিনি এ জেলায় এসেছেন অল্প কিছুদিন আগে। বিষয়টি তার জানা ছিল না। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য লোকজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এলাকাবাসীর সুবিধামতো স্থানে স্থায়ী ইউপি কার্যালয় স্থাপনে উদ্যোগ নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/০৩অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)