‘যত পারেন তত খান, ভোট দিতে সাবধান’
‘টাকা-পয়সা আল্লার দান, যত পারেন তত খান, তবে ভোট দিতে সাবধান।’ প্রচার-প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এভাবেই স্লোগান সাজিয়ে মাইকিং চলছে ভোটারদের মন কাড়তে।
৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার নবগঠিত গুইমারা উপজেলার তিন ইউনিয়ন (সিন্দুকছড়ি, হাফছড়ি ও গুইমারা সদর) পরিষদ নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) প্রচারণার শেষ দিন থাকায় প্রার্থীরা দলবলে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। গণসংযোগ চলছে, মাইকিংয়ের পাশাপাশি ভোট প্রার্থনায় হেঁটে ছুটছেন পাহাড় থেকে পাহাড়ে। পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে কাছে টানছেন।
এবার তিন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে ২৩ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৮০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গুইমারা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী হরিপদ্ম ত্রিপুরা এবং ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী জ্যোতি বসু ধামাই’র বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা নির্বাচিত হয়েছেন।
সদর ইউনিয়নে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মেমং মারমা নৌকা প্রতীকের সাথে লড়াই হবে ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী মোখলেছুর রহমানের। তবে এ দুজনের মধ্যেই বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রায় টানা ৩০ বছরের চেয়ারম্যান স্বর্গীয় নগেন্দ্র নারায়ণ ত্রিপুরার ছেলে নির্মল নারায়ণ ত্রিপুরা। শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ে কার মুখে ফুটবে বিজয়ের হাসি সেই অপেক্ষায় গুইমারাবাসী।
হাফছড়ি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন গত দুইবারের চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা আ.লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর চাচা চাইথোয়াই চৌধুরী। একই ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. মাহবুব আলী। তবে পাকা দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাহাড়ের আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সমর্থন নিয়ে ট্রামকার্ড হাতে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তরুণ চেয়ারম্যান উশ্যেপ্রু মারমা। এ ইউনিয়নে শেষ পর্যন্ত অবস্থা বুঝে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে উশ্যেপ্রু ও মাহবুবের একাট্টা হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। আর তা যদি হয়ে যায় সংগোপনে, তবে মাহবুবেব (ধানের শীষ) বিজয় ঠেকায় কে! গুইমারা
উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে একমাত্র হাফছড়ি ইউনিয়নে জাকের পাটির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে (গোলাপ ফুল) প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন দুইবারের ইউপি মেম্বার মো. জামাল উদ্দীন।
সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী মাঠে লড়ছেন জেলা আ.লীগের সদস্য ও চারবারের চেয়ারম্যান সুইনুপ্রু চৌধুরী। এ ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ের লক্ষ্যে লড়ছেন গুইমারা উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক দীন মুহাম্মদ। তবে বড় দুদলের মাঝে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়াইয়ে জন্য প্রস্তুত আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক পন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী রেদাক মারমা।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গুইমারা সদর ইউনিয়নে ৯৫৫৬, হাফছড়ি ইউনিয়নে ১৩২১৮, সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নে ৪৬০৭ সহ গুইমারা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ২৭৩৮১। ৩ ইউনিয়নের ২৭টি কেন্দ্রে ভোট ৩১ অক্টোবর ভোট হবে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রিপন হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, ৩১ অক্টেবর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে সকল ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন উপজেলার আওতাধীন প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৮ অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন