জিয়ানগরে ডাকাতি-ধর্ষণ: আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছে মানুষ
পিরোজপুরের জিয়ানগরে ডাকাতি ও ডাকাতদের ধর্ষণের ঘটনায় উপজেলার দড়িচর গাজীপুরের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ডাকাতি ও ধর্ষণের পর মোতায়েন করা পুলিশ প্রত্যাহার হওয়ায় ওই চরাঞ্চলের বাসিন্দারা ডাকাত আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জিয়ানগর উপজেলার দড়িচর গাজীপুর এলাকায় গত ১০ অক্টোবর রাতে মোরেলগঞ্জ এলাকার সিংজোড় গ্রামের খসরু খানের নেতৃত্বে ৫-৬ জনের একটি ডাকাত দল মিজানুর রহমান খানের বাড়িতে হানা দেয়। পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মালামাল লুটের পাশাপাশি এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে ডাকাতরা।
এ ঘটনায় ১১ অক্টোবর খসরুকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচজনের নামে মামলা হয়। কিন্তু গত ২০ দিনেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এমনকি ডাকাতি ও ধর্ষণ ঘটনার পর গত ১৪ অক্টোবর পিরোজপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে যে চারজন পুলিশকে ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল, তাদের গত বৃহস্পতিবার প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ডাকাতদল হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মিজানুর রহমানকে।
এ অবস্থায় ওই এলাকার অনেক পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। মিজানুর রহমানের প্রতিবেশী বাদল খানের পরিবার তাদের একটি।
শুক্রবার দড়িচর গাজীপুর এলাকায় গেলে ধর্ষিত গৃহবধূর শাশুড়ি সাংবাদিকদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘মামলা করলেও পুলিশ আসামি ধরছে না। তার ওপর রাতে ট্রলারে সন্ত্রাসী ও ডাকাতদল এলাকায় মহড়া ও হুমকি দিচ্ছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
ডাকাতের ভয়ে ঘরছাড়া দড়িচর গ্রামের বাসিন্দা বাদল খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছয় বছর ধরে এই চরে আছি। কিন্তু এখন ডাকাতের উপদ্রবে সেখানে থাকাটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই এলাকা ছেড়েছি।’
উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা আমাকেও হুমকি দিচ্ছে। দড়িচর গাজীপুরের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। কয়েকটি পরিবার ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। ওই চরাঞ্চলের বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।’
জিয়ানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরো তদন্ত চলছে।
পুলিশ প্রত্যাহারের বিষয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তার জন্য রাতে পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা হয়েছিল। বর্তমানে এ জেলার কিছু উপজেলায় ইউপি নির্বাচনের কারণে পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার বিষয়ে ওসি বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। হয়তো ডিএনএ টেস্ট করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/২নভেম্বর/মোআ)