জিয়া চালাকি করেছিলেন
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কী ঘটেছিল? এর প্রেক্ষাপটে যে বিপ্লব, প্রতি বিপ্লব হয়, তার কুশীলব কারা ছিলেন? এর সুফল পেয়েছেন কে? জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ তখন কেন সরকারে আসতে পারলো না? অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম কেন ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়লেন? দেশের ইতিহাসের গোলযোগপূর্ণ সেই সময় খুব কাছ থেকে দেখেছেন তখনকার জাসদ নেতা, এখনকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। ঢাকাটাইমসের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে উঠে এসেছে অনেক অজানা তথ্য। এর দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ হলো আজ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ।
আপনি কী ধরনের সম্ভাবনা দেখছেন?
বাংলাদেশে নতুনমুখী একটা যাত্রা শুরু হয়েছে। তরুণ সম্প্রদায়ের অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে পড়াশোনা করছে। বিষয়ের গভীরে যেতে চাচ্ছে। যেটাকে বলা হয় তথ্যানুসন্ধান। বিভিন্ন অনলাইন ও ব্লগগুলোতে লেখাগুলো আমি পড়েছি। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত। আরেকটা বড় আন্দোলন হয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ। এই গণজাগরণ হয়েছে বলেই তরুণদের এই উদ্যোমী যাত্রা শুরু হয়েছে।
কিন্তু দক্ষিণপন্থী শক্তি বা স্বাধীনতাবিরোধীদের অপপ্রচার তো থেমে নেই।
একদিকে যেমন দক্ষিণপন্থী শক্তি চরমভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ছে মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার উপর। এর বিপরীতে আবার প্রগতির শক্তি, মানবিকতার শক্তি, অসাম্প্রদায়িকতার শক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতার শক্তি, তারা আবার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই আমি ভয় পাই না। ৭ নভেম্বরের সত্যপ্রকাশে সব বাধা আমরা অতিক্রম করতে পারব।
৭ নভেম্বরের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনাও বলা হয়।
৭ নভেম্বরের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এর আগে কতগুলো ঘটনা ঘটে গেছে। সেগুলো বলতে হলে, একেবারে গোড়ায় যেতে হবে অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ষড়যন্ত্র হয়েছে। সেটাও হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে যে দলটি নেতৃত্ব দিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের ভেতরে।
কী ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল?
সেই সময় খন্দকার মোশতাকরা তৈরি হয়েছে। তাহের উদ্দিন ঠাকুররা সৃষ্টি হয়েছে। একটা অংশ ফেডারেশন চেয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের বিপরীতে। এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল অনেক সেনা কর্মকর্তা। মাত্র নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই সময় সেনাবাহিনীর মধ্যে তিনজন সেনা নায়কের নামে তিনটি বাহিনী তৈরি হয়ে গেল। এটা কেন তৈরি করল? এটা তো উচিত ছিল না। কারণ এগুলোই ছিল সেই বিষবৃক্ষ। যেগুলো পরে স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানের আদলে একটা সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছিল।
কোন তিনটি বাহিনীর কথা বলছেন?
জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে জেড ফোর্স, কে এম সফিউল্লাহর নেতৃত্বে এস ফোর্স এবং খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে কে ফোর্স। এবং এগুলো থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যোগ হয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্য দিয়েই জাতির জনককে হত্যা করা হয়।
কর্নেল তাহের সেনাবাহিনী ছেড়ে দিয়েছিলেন কেন?
কর্নেল তাহের তো রাজনীতি করছিলেন। ষড়যন্ত্র করেননি। তিনি তো ১৯৭২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা দিয়ে সেনাবাহিনী ছাড়েন। তিনি চিঠির আদলে একটা পদত্যাগপত্র লিখেছিলেন। যেটা বিভিন্ন জায়গায় পরে প্রকাশিত হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে তিনি কী লিখেছিলেন?
পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, সেনাবাহিনীর মধ্যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটা ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরঞ্চ কর্নেল আবু তাহেরকে সক্রিয় অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এটা তিনি বঙ্গবন্ধুকে জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি অনুভব করছি আরও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ধরনের ষড়যন্ত্র জনগণের আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে। এগুলোকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। যদি প্রতিহত করা না হয় সেনাবাহিনীতে আমার কাজ করা সম্ভব হবে না। আমি ফিরে যাবো তাদের কাছে যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন আমার চারপাশে জড়ো হয়েছিল। আমি বলব কী ধরনের বিপদ তাদের দিকে ধেয়ে আসছে।’ এগুলো জানিয়েই তো তিনি সেনাবাহিনী ছেড়েছেন।
বঙ্গবন্ধু তো বেশ বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা ছিলেন। তিনি কি কর্নেল তাহেরের ইঙ্গিত বুঝতে পারেননি?
বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার ও বিশাল হৃদয়ের অধিকারী। আর এজন্যই তিনি বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই যে ষড়যন্ত্রকারীরা যে তাকে ঘিরে ফেলেছিল এটা হয়তো তিনি আঁচ করতে পারেননি। ফলে কর্নেল তাহেরের মতো তার বিশ্বস্ত সহচরদের কাছ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারা সেনাবাহিনীতে থাকতে পারেননি।
কর্নেল তাহের কি ওই সময় একাই সেনাবাহিনী ছেড়েছিলেন?
কর্নেল তাহেরের মতো আরেকজন সেনা কর্মকর্তা পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। তিনি কর্নেল জিয়াউদ্দিন। ঢাকার ৪৬ বিগ্রেডের কমান্ডার ছিলেন। তিনিও ১৯৭২ সালে প্রতিবাদ করে সেনাবাহিনী ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাহের ছেড়ে দিলেন, জিয়াউদ্দিন ছেড়ে দিলেন। রয়ে গেল কারা? যারা ষড়যন্ত্র করেছিলেন। জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ রয়ে গেল।
খালেদ মোশাররফকে ষড়যন্ত্রকারী বলছেন কেন?
খালেদ মোশাররফকে বলা হয় আওয়ামী লীগের বন্ধু। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে নাকি তার অবস্থান। একেবারেই মিথ্যা কথা। খালেদ মোশাররফ আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতো। কর্নেল ফারুক ছিল তার আত্মীয়। সব পরিকল্পনা সম্পর্কে সে জানতো। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যদিও তিনি ছিলেন সিজিএস (চিফ অব দ্য জেনারেল স্টাফ)। ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের পর তারা যখন জাতীয় চার নেতাকে মেরে ফেলল সেই সময় নূর চৌধুরী দুপুর তিনটায় এসে সব খবর জানাচ্ছেন। সেটা জানার পরও খালেদ মোশাররফ তাদের একটা প্লেনে করে নিরাপদে পাঠিয়ে দিলেন। সেই প্লেনটা চালিয়েছিলেন তার আত্মীয় একজন ক্যাপ্টেন।
৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসলে কী ঘটেছিল?
৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি অংশকে আরেক অংশের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়া হলো। একদিকে ল্যান্সার, আর্টিলারি। অন্যদিকে ইনফেনট্রি। এই অবস্থায় সৈন্যরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল। কারণ খালেদ মোশাররফ বললেন, তিনি সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবেন। তাহলে প্রয়োজন ছিল খুনিদের ধরে আনা। তাদের শাস্তি দেয়া। সেটা না করে তিনি নিজে চিফ অব স্টাফ হলেন। আরেক চিফ অব স্টাফকে বন্দী করলেন। আর আঁতাত করলেন। তাহলে সৈন্যবাহিনী তো বিদ্রোহী হবেই।
তারপর তো ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান...
একটা বিক্ষুব্ধ পরিবেশে সৈন্যবাহিনী কর্নেল তাহেরের কাছে ছুটে আসে। তারা এসে বলে, আমরা বিদ্রোহ করব। কারণ, আমরা মুক্তিযুদ্ধ তো এজন্য করি নাই। আমরা পরস্পর ভাই-ভাই। আমরা এক ভাই অন্য ভাইয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরব। আর ওরা প্রাসাদ ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা দখল করবে— এটা আমরা হতে দেবো না। এই জন্যই মূলত ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান হয়েছে।
তারা কর্নেল তাহেরের কাছে কেন আসল?
কারণ কর্নেল তাহের কুমিল্লাতে সৈনিকদের নিয়ে স্বপ্নের সেনাবাহিনী গড়তে শুরু করেছিলেন। যেখানে অফিসার, জোয়ানরা একসঙ্গে কাজ করে, একসঙ্গে খায়। তারা একসঙ্গে উৎপাদনশীল সেনাবাহিনী তৈরি করেন। নতুন ধারণা। জিয়াউদ্দিন ঢাকাতে এসে বক্তৃতা দিতেন। তারা কর্নেল তাহের সম্পর্কে জানত। একটা পা ছিল না। আর সেনাবাহিনীর ভিতরে পরিকল্পনা হতো। কর্নেল তাহের তো গোপনে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা গড়েই তুলেছিলেন। তাই তার কাছে আসাটা স্বাভাবিক ছিল।
জাসদের রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল?
জাসদও ছিল। সবাই মিলে বলল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতা নিয়ে নিয়েছে তাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে আবার পুনরুদ্ধার করতে হবে। এটাই ছিল লক্ষ্য। এই সুযোগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংস্কার করা। এজন্যই ছিল ১২ দফা।
১২ দফা কেন দেয়া হয়েছিল?
১২ দফা পড়লে দেখা যায় কী সুন্দরভাবে সব কিছু বলা আছে। এটাই ছিল আসলে স্বাধীনতার চেতনা। কিন্তু আমাদের একটা সমস্যা হল, দীর্ঘসময় বাংলাদেশে একদলীয় শাসন চলছিল। বাকশাল হওয়ার পর থেকে। জাসদের ওপর নির্মম অত্যাচার চলে। কোনো রকম কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম ছিল না।
৭ নভেম্বরে জন্য সংগঠিত হওয়া চ্যালেঞ্জ ছিল কিনা?
৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কোনো সরকারও ছিল না। সব চলছিল গুজবে। বিটিভিতে রুনা লায়লার গান চলছে আর এদিকে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র চলছে। এরকম একটা অবস্থা, যেখানে আইনি কোনো রাজনীতি নেই, সেখানে দ্রুত সংগঠিত হওয়া কঠিন ছিল।
তারপরও তো অভ্যুত্থান হয়েছে।
হ্যাঁ, ঘটনা দ্রুতলয়ে ঘটে যায়। সৈনিকরা সারাদেশে বিদ্রোহ করবে ফেলবে। দেশে একটা গৃহযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়। হয়তো আমাদের দেশে স্বাধীনতা থাকে না। এই অবস্থায় জাসদ এবং কর্নেল তাহেরকে অভ্যুত্থানে যেতে হয়। তারা যদি নাও করতে তাহলে সৈনিকরা বিদ্রোহ করতো। আরও বিশৃঙ্খলা দেখা দিতো। রক্তগঙ্গা বয়ে যেত।
অভ্যুত্থানের প্রক্রিয়াটা কী ছিল?
এটা কি আর সব সামরিক ক্যুর মতো ছিল না। সাধারণ সৈন্যরা দলে দলে স্বেচ্ছায় উর্দির ওপর লুঙ্গি পরে চলে এসেছে। পায়ে বুট ছিল। মিটিং করছে। ঢাকার বাইরে এসে। আমার মনে আছে কর্নেল তাহের বসে আছেন। সেখানে তার সামনে একশোর ওপর সাধারণ সৈন্য। কর্নেল তাদের তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দিচ্ছেন। কে যাবে বেতারে, কে যাবে জেলখানায় বন্দিদের মুক্ত করতে। কে যাবে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করতে। কে যাবে অস্ত্রাগার রেকি করতে।
দলগুলো কী তাদের অভিযানে সফল হতে পেরেছিল?
কর্নেল তাহের যেসব গ্রুপকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছিলেন, তারা সবাই সফল হয়েছিলেন। এরা সবাই ছিল সাধারণ সৈন্য। সৈনিক সংস্থা তো গোপন সংগঠন ছিল। এদের মধ্য থেকে নেতারা গ্রুপগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছে।
জিয়াউর রহমানকে কারাগার থেকে বের করে আনার সিদ্ধান্ত কার ছিল?
জিয়াউর রহমান যখন বন্দি হয় তখন সে একটা ফোন করে বলেছিলেন, আমাকে রক্ষা করো। পরে তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ৪ নভেম্বর খবর পাঠালেন। কর্নেল তাহের জিয়াউর রহমানকে বিশ্বাস করতেন সেটাও না। তিনি মনে করেছিলেন, জিয়াউর রহমানের প্রতি সৈন্যদের একটা অনুকম্পা তৈরি হয়েছে তাকে বন্দি করার কারণে। আর খালেদ মোশাররফ হাত মিলিয়েছে খুনিদের সঙ্গে। সুতরাং এ অবস্থায় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কৌশলগত একটা ঐক্য সেটা এক রাতের জন্য হোক। তাহলেও আমাদের জন্য সুবিধা হয়। কারণ কর্নেল তাহের তো সেনাবাহিনীর বাইরের লোক। সেনাবাহিনীর ভেতরের একটা লোক যে বন্দি তার যদি জীবন বাঁচান, তাহলে হয়তো ভালো হয়।
জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কর্নেল তাহেরের ধারণা কী ছিল?
কর্নেল তাহের অবশ্য জানতেন জিয়াউর রহমান মেরুদ-হীন একটা লোক। কিছু করতে পারবে না। জিয়াকে নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয় তখন কর্নেল তাহের বলেছিলেন, ‘হি উইল বি আন্ডার মাই ফুট’। অর্থাৎ তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
পরে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ ছিলো?
জিয়াকে উদ্ধার করে ক্যান্টনমেন্টের বাইরে এলিফেন্ট রোডে, যেখানে কর্নেল তাহের অবস্থান করছিলেন জাসদ নেতারাসহ সেখানে নিয়ে আসার কথা ছিলো। কর্নেল তাহের চেয়েছিলেন কার্যক্রমগুলো বাইরে থেকে হোক। অভ্যুত্থানটাকে বেসামরিক চরিত্র দেয়ার জন্য। তা না হলে ক্যান্টমেন্টের ভেতর থেকে করতেন। তখন এটা সম্ভব ছিল। কারণ তেমন কোনো শৃঙ্খলা ছিল না।
জিয়াউর রহমানকে কি এলিফেন্ট রোডের বাসায় আনা হয়েছিল?
ভুলটা প্রথমেই হয়ে গেল। সৈন্যরা যখন জেল থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করল। তখন সৈন্যরা তাকে বলল, আপনি মুক্ত। কর্নেল তাহের আপনাকে মুক্ত করেছেন। আপনাকে তার কাছে নিয়ে যাবো। জিয়াউর রহমান চতুর ছিলেন। তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইতে কাজ করেছেন। তার চাতুরি পরে আরও ভাল বোঝা গেছে। যাই হোক, জিয়া চালাকি করলেন। তিনি তখন সৈন্যদের জড়ায়ে ধরে বললেন, ‘আরে কর্নেল তাহের তো আমার নেতা। তোমরা তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে আসো। সে এখানে থেকে নেতৃত্ব দেবে। তাকে এখনই নিয়ে আসো।’
আগামীকাল তৃতীয় পর্ব : জিয়া-খালেদা-তারেকের বিএনপি থাকবে না, ভিন্ন কিছু হবে