‘চেয়ারম্যান আজাদকে হত্যায় সাবেক চেয়ারম্যান দুই লাখ টাকা দেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৩৯

জয়পুরহাট সদর থানার ভাদশাহ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে হত্যার জন্য তার আগের চেয়ারম্যান হাতেম দুই লাখ টাকা দেন। ঘটনার দিন রাতে দুর্গাদহ বাজারে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মুন্না, মুনির নাজিম একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে খুনের ছক আঁকা হয়।

বুধবার বিকালে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মাসুদ কাওরানবাজারের বিএসইসি ভবনের দশম তলায় র‌্যাবের মিডিয়া শাখায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মাসুদ বলেন, গত ৪ জুন জয়পুরহাটের সদর থানার ভাদশাহ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে দুর্বৃত্তরা রাতে ঘরে ফেরার পথে প্রথমে গুলি করে পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি গত ১২ জুন মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা করেন।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর তুরাগ থানার রানাভোলা নামক স্থান থেকে এই হত্যার প্রধান আসামি মো. মুন্না পারভেজকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মুন্না পারভেজকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন মুন্না, নাজিম ও মুনির দুর্গাপুর বাজারের কাছে একটি মিটিং করেন। এই মিটিংয়ে চেয়ারম্যান আজাদকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক চেয়ারম্যান হাতেমের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেয়া হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক মুন্না অপর আসামি সৈকতকে আজাদ চেয়ারম্যানের গতিবিধি লক্ষ করতে বলেন। সেই কথামত সৈকত দুর্গাহপুরবাজারে অবস্থান করে এবং রাত সোয়া নয়টার সময়ে সৈকত মোবাইলের মাধ্যমে আজাদ চেয়ারম্যানের গতিবিধি সম্পর্কে মুন্নাকে জানায়।

তুহিন মাসুদ বলেন, আজাদ চেয়ারম্যান গোপালপুরবাজার অতিক্রম করার সময়ে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা অপর আসামি সাইফুল মোটরসাইকেলের হেডলাইট জ্বালায় এবং মুন্না, পারভেজ, নাজিম, সোহেল, সৈতক, রাজু, সাইফুল এবং হাকিম মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে হামলা করে। তারা প্রথমে চেয়ারম্যানকে হাতে থাকা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। এরপর তারা চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেলে থানা পবিত্র কুমারকে কুপিয়ে জখম করে। পরে পবিত্র কুমার পালিয়ে যান। তখন চেয়ারম্যান আজাদ প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে মুন্না ও নাজিম তাকে লক্ষ করে গুলি করেন। এই সময়ে নয়ন এগিয়ে এলে মুন্না ও নাজিম তাকেও গুলি করেন। এই গুলি নয়নের বুকে লাগে। আজাদ চেয়ারম্যান পেটে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও আত্মরক্ষার্থে পালনোর সময়ে আসামিরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এই মামলার আসামি সৈকত ও মুনির গত ১৪ জুন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।

র‌্যাবের অধিনায়ক বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি মুন্না পারভেজ নিজেকে ভাদশাহ ইউনিয়নের মেম্বার হিসেবে দাবি করছেন। মুন্না আরও কয়েকটি মামলার আসামি, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুইজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা দুইজনেই মুন্নার কথা স্বীকার করেছেন আদালতে।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান।

(ঢাকাটাইমস/০৯নভেম্বর/এএ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :