ট্রাম্পের চাওয়া মানলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা হিলারির
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পপুলার ভোটে হারলেও নির্বাচনপদ্ধতির কারণেই জিতে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভোটে জয়ের এই পদ্ধতি পছন্দ নয় তার। ট্রাম্প চান, জনতার রায় যার পক্ষে বেশি যাবে, তিনিই হবেন প্রেসিডেন্ট।
গত ৮ নভেম্বরের ভোটের পর সিবিএস টেলিভিশনকে দেওয়া এক ঘণ্টার সাক্ষাৎকারে তার এই অবস্থান তুলে ধরেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণের পদ্ধতিটি বেশ জটিল। …টি রাজ্যের প্রতিটিতে পপুলার ভোট যে প্রার্থী বেশি পান তার বাক্সেই ওই রাজ্যের জন্য নির্ধারিত ইলেকটোরাল ভোটের সবগুলো যায়। এভাবে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি যিনি পান তিনিই নির্বাচনে জিতেন।
ফলে প্রায়ই বেশিরভাগ রাজ্যে পপুলার ভোটে জিতলেও হেরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে সেই প্রার্থীর।
বর্তমান শতকে ২০০০ সালে বিল ক্লিনটনের কাছে জর্জ ডব্লিউ বুশ সিনিয়র, ২০০৮ সালে জর্জ বুশ জুনিয়নের কাছে আল গোর এবং ২০১২ সালে বারাক ওবামার কাছে মিট রমনি পপুলার ভোট বেশি পেয়েও হেরে যান ইলেকটোরাল ভোট কম পাওয়ায়।
তারও আগে ১৯ শতকে অ্যান্ড্রু জ্যাকশন, স্যামুয়েল টিলডেন এবং গ্রোভার ক্লেভেলেন্ডকেও এই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলেও তিনি হিলারির চেয়ে দশমিক ৫ শতাংশ ভোট কম পেয়েছেন। হিলারি পেয়েছেন ছয় কোটি ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৬ ভোট। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ছয় কোটি তিন লাখ ৭১ হাজার ১৯৩ ভোট। অর্থাৎ ট্রাম্প হিলারির চেয়ে ছয় লাখ ৬৮ হাজার ৪৮৩ ভোট কম পেয়েছেন।
পপুলার ভোটে হিলারির এগিয়ে থাকা তার সমর্থকদের মধ্যে আফসোস বাড়িয়েছে। এরই মধ্যে ইলেকটোরাল কলেজের প্রতিনিধিদেরকে ট্রাম্পকে ভোট না দিয়ে হিলারিকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের আবেদন করে বিপুল পরিমাণ সাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে। এমনটা যদিও কখনও ঘটেনি, তারপরও ট্রাম্পবিরোধীরা আশা করছেন, যেহেতু এখনও কাগজ কলমে ট্রাম্পকে ঠেকানোর সুযোগ রয়েছে, তাই আশা ছাড়ছেন না তারা।
২০১২ সালে রিপাবলিকান পার্টির নেতা মিট রমনি ডেমোক্রেট প্রার্থী বারাক ওবামার কাছে হেরে যাওয়ার পর ৮ নভেম্বরের ভোটে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার টুইটারে লিখেছিলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য ইলেকটোরাল কলেজ একটি অভিশাপ’। অথচ চার বছর পর এই একই সুবিধা পেয়েছেন ট্রাম্প।
ইলেকটোরাল ভোট পদ্ধতিরে সুবিধা নিয়ে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ট্রাম্প। এই পদ্ধতি নিয়ে তিনি এখন কী ভাবছেন-সিবিএস টেলিভিশনের সাক্ষাৎকার ‘সিক্সটি মিনিট’ এ উপস্থাপিকা লেইসলি স্টাল জানতে চান ট্রাম্পের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘পপুলার ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণের পক্ষে আমি।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জিতেছি বলে আমার মনোভাব পাল্টাবো না। কেউ ১০ কোটি ভোট পেয়ে হারলো আবার কেউ নয় কোটি ভোট পেয়ে জিতলো-এটা হতে পারে না। এটা পাল্টানোর একটি কারণও আছে। এতে সবগুলো রাজ্য সমানাধিকার পাবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/ডব্লিউবি)