জনগণের আস্থা ধরে রাখাই আমাদের পরিকল্পনা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে কৃষি ও সমবায় সম্পাদক পদ পেয়েছেন। তার আগের দুই কমিটিতে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল ছাত্রীসংসদের ভিপি, পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং শেষে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্বকৃত নোমান
আপনি টানা তৃতীয়বারের মতো সম্পাদকম-লীতে স্থান পেয়েছেন; অনুভূতি কেমন?
কৃষি ও সমবায় সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মানুষের জন্য, দলের জন্য পুনরায় কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। কৃতজ্ঞতা জানাই আপনারা যারা পাশে ছিলেন, শুভাকাক্সক্ষী হয়ে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি; তাঁর আদর্শ লালন করে স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগ করেছি এবং যতদিন বেঁচে থাকব তাঁর আদর্শের কর্মী হিসেবে মানুষের পাশে থাকব।
নতুন-পুরনো মিলিয়ে এবার কমিটি বেশ আলোচনামুখর বলা যায়। আপনার মন্তব্য কি?
কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত এই নেতৃত্ব নির্বাচন আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মীর প্রত্যাশার প্রতিফলন। তাছাড়া কাউন্সিলে ১০টি দেশ থেকে আগত প্রায় ৫০টি দলের নেতারা যেভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে প্রশংসা করেছেন তা দিয়ে আবারও প্রমাণ হয় শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃত্বের কাতারে। আমি মনে করি, শেখ হাসিনা আবারও এই দলের দায়িত্ব নিয়েছেন মানে তিনি বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। কারণ, বারবার প্রমাণ হয়েছে তাঁর হাতেই এই দেশ নিরাপদ, তাঁর হাতেই এই দেশের ভবিষ্যৎ। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও তাঁর প্রতিই আমাদের আস্থা। তিনি দলের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করেন সেটাই করেন, আমরা সবাই তাঁর সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন রাখি; কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দূরদর্শী ও দক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে সেটি প্রমাণ করে দিয়েছেন।
সম্মেলনের দিন কাউন্সিলরদের আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন; টুঙ্গিপাড়ায় দলের প্রথম যৌথসভায়ও নির্বাচনের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়েছেন শেখ হাসিনা। নতুন কমিটি তাহলে নির্বাচনকে মাথায় রেখে সাজানো?
গণতান্ত্রিক পন্থায় আওয়ামী লীগের জন্ম এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মানুষের মুক্তির জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম। আপনারা জানেন, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দীর্ঘসময় ধরে গণতন্ত্র সামরিক অস্ত্রে জিম্মি হয়েছিল। ’৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে নানা আন্দোলন-সংগ্রাম করে লুট হওয়া গণতন্ত্র পুনরায় ফিরিয়ে আনেন। আওয়ামী লীগ বরাবরই মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সামনে যেহেতু আরেকটি জাতীয় নির্বাচন আসন্ন, সেহেতু নেতা-কর্মী এবং দলের শীর্ষ পর্যায়ে সবাইকে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের বাস্তবায়িত প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরে জবাবদিহিতার মাধ্যমে পুনরায় জনগণের আস্থা ধরে রাখার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
নারীদের জন্য রাজনীতি অনেক কঠিন; আপনি তো দলের সহযোগী নারী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বর্তমানে দলের শীর্ষ পর্যায়ে আছেন, কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
নারীদের জন্য রাজনীতি কঠিন, কথাটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। নিশ্চয়ই জানেন, এদেশে নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হয়। কারও অনুগ্রহ বা ছাড় দেওয়ার মধ্য দিয়ে নয়, এদেশে নারী নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে আসনগুলো বুঝে নিয়েছে। যদিও আমাদের রাজনীতিতে শীর্ষ পর্যায়ে নারী অবস্থান করছে, তারপরও বলব নারীরা এখনো রাজনীতিতে অবহেলিত; বিশেষ করে তৃণমূল রাজনীতিতে। এক্ষেত্রে তৃণমূলে পুরুষ সহকর্মী রাজনীতিবিদরা যদি একটু সহনশীল আচরণ করেন তাহলে নারীরা রাজনীতিতে আরও ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে। তারপরও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টির কারণে নারীরা এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাই তো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ কিছুদিন আগেও নারী ক্ষমতায়নের জন্য সম্মাননা দিয়েছেন এবং আয়োজকরা শেখ হাসিনাকে নারী ক্ষমতায়নে রোল মডেল হিসেবে দেখছেন।
ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/এসএন/এমএইচ