বড় বাঘেই ভয় নেই, ছোটো বাঘ আসলে আসুক: আইভী

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:১৪ | প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:২০

পথঘাট, ড্রেন—অনেক তো হল, এবার? সেলিনা হায়াৎ আইভী হেসে জবাব দিলেন, ‘কত কাজ বাকি! নারায়ণগঞ্জকে গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি করতে চাই।’

: আর?

: জলাশয়গুলোর দিকে নজর দেবো। সেটা হোক খাল কিংবা পুকুর। সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেবো। বাঁধাই করে দেবো চারপাশ। মানুষ যেন হাঁটতে পারে। সময় কাটাতে পারে। নিরিবিলি। সুন্দর সবুজ পরিবেশে।

: গাছ-গাছালি তো কম। সবুজায়ন কীভাবে?

: গাছ লাগনো শুরু হয়েছে। বন্ধ হবে না। বাড়বে। যেই যাই বলুক, পরিবেশ রক্ষায় গাছের বিকল্প গাছই।

সোমবার দুপুরে নগরভবনে বসেই কথা বলেন ঢাকাটাইমসের সঙ্গে। অনেক ব্যস্ততা। সামনে নির্বাচন। মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নৌকা এখন তাঁর ঘরে। সেই ঘরে আসছেন সবাই। কেউ ফুল নিয়ে। কেউ কদমবুসি করে বলছেন, ‘আপা দোয়া করবেন।’

জবাবে বললেন, ‘দোয়া আপনারা করবেন আমার জন্য। আর ফুল তো আমার প্রাপ্য না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাপ্য। তিনিই তো নারায়ণগঞ্জের মানুষের আশার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।’

২৪ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এর আগে ছাড়বেন মেয়র পদ। শেষ মুহূর্তে কাজের ব্যস্ততাও কম না। কাজ করছেন। দলের নেতাকর্মীদের সময় দিচ্ছেন। মুঠোফোনটিও একটু পর পর বেজে উঠছে। ফোন ধরছেন। কথা বলছেন। আমার সামনের চেয়ারে থাকা লোকজনদেরও সময় দিচ্ছেন। কাজ আর গল্পের ফাঁকে সময় দিলেন ঢাকাটাইমসকেও। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

নির্বাচনে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কে হবে এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন, আলোচনা। আপনি কীভাবে দেখছেন?

প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে নির্বাচনের উৎসব ভাব থাকবে না। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় আসুক। এনিয়ে আমি চিন্তিত নই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। জনগণ যে রায় দেবে তাই মাথা পেতে নেব।

শোনা যাচ্ছে ওসমান পরিবার থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। প্রয়াত নাসিম ওসমানের স্ত্রী পারভীন ওসমানের নাম আলোচনায় আসছে...

(হেসে) বড় বাঘই ভয় পাই না, ছোটো বাঘ আসলে আসুক। যে প্রার্থী হওয়ার হোক। আমার সমস্যা নেই। জনগণ আমার সঙ্গে থাকলেই হবে। বড় বাঘ বলতে কাকে বোঝাচ্ছেন, শামীম ওসমান কে?

(আবারও হাসলেন) বুঝে নেন।

মানুষ তো তাকিয়ে আছে আপনার দিকে...

আমি মানুষের দিকে তাকিয়ে আছি। যাদের জন্য কাজ করছি। ভবিষ্যতেও করব আশা করছি। তাদের সমর্থন চাই। দোয়া চাই। সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাইব। দোয়া চাইব।

এবার মেয়র হলে কোন কাজে বেশি গুরুত্ব দেবেন?

জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষণের কেউ নেই। যে যেভাবে পারছে ভোগ দখল করছে। এটা হতে দেবো না। খালগুলো সংরক্ষণ করব। বড় বড় পুকুরও হতে পারে। চারপাশে হাটার রাস্তা তৈরি করব। পাশাপাশি নিরাপদ পানির সংস্থান। জলাশয়গুলো সংরক্ষণ করা গেলে এটা সহজ হবে।

অনেক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা নারায়ণগঞ্জ। শিল্প এলাকাগুলো যদিও এমনটাই হয়।

চিন্তা আছে। খালি জায়গা বের করব। সিটি করপোরেশনের অনেক জায়গা-জমি এদিক-সেদিক হয়েছে। এগুলো উদ্ধার করে খেলার মাঠ করে দেবো। সব ওয়ার্ডে অবশ্য খালি জায়গা নেই। দুটি বা তিনটি ওয়ার্ড মিলে একটা বড় খেলার মাঠ করা যেতে পারে।

এর আগে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন?

সাধারণ মানুষের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি। সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দরের রাস্তাঘাট, ফুটপাত, ড্রেনেজ ব্যবস্থা দেখলে বুঝতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জ শহরেও কাজ হয়েছে। ফুটপাত উদ্ধার করেছি। তবে হকারদের জন্য পুরোপুরি খালি করা সম্ভব হয়নি।

হকাররা তো এখনও ফুটপাতে বসছে...

হ্যাঁ, তাই তো বললাম। পুরোপুরি উচ্ছেদ করা যায়নি। হকারদের জন্য হকার্স মার্কেট করে দিয়েছি। তারপরও তারা ফুটপাতেই বসবে। রাজনৈতিক একটা প্রশ্রয়ও তো আছে। এজন্য কিছু করা যাচ্ছে না।

রাজনৈতিক প্রশ্রয় বলতে কী বোঝাচ্ছেন?

যাদের প্রশ্রয় পেয়ে তারা এখনও ফুটপাত ছাড়ছে না। এই শহরে আইভীর ভাল কাজের বিরোধিতা যারা করে তারাই এটা করছে। সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করার মত সক্ষমতা আছে কিনা সেটাও তো প্রশ্ন

আমরা অনেককিছু বলি এটা করবি, সেটা করব। কিন্তু সিটি করপোরেশনের আইনি ক্ষমতা এবং বাজেটের সীমাবদ্ধতার কারণে চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না। তাই ভোটারদের প্রলভন দেখাতে চাই না। বাস্তবতার সাথে মিল রেখেই জনগণের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করব। কাজ করে যেতে চাই। অতীতে এভাবেই কাজ করেছি।

চাষাড়া মোড়ের যানজট তো সেই পুরোনো। কমছে না। দিনকে দিন বাড়ছে...

হ্যাঁ, যানবাহনের চাপ বেশি। যদিও এটা আমার কাজ না। আমি বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও করব। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে কী করা যায় দেখবো। বিকল্প রাস্তা করা যায় কিনা। অবশ্য বিকল্প রাস্তা করার উপায়ও নেই। জায়গার অভাব।

তাহলে কী করবেন?

নদীর পার ঘেঁষে হাঁটার রাস্তার তৈরি করার চেষ্টা করব। ইতিমধ্যে নদীর পূর্ব পারে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। কাজ চলছে। নদীর এপারে জায়গা কম আছে। সার্কুলার রোড না থাকলে এটা নগরের তো চলতে পারবে না।

শহরের ভেতরের রাস্তা প্রশস্ত করার কোনো উদ্যোগ নেবেন?

আগে তো আরও সরু ছিল। অনেক প্রশস্ত করেছি। আর উপায় নেই।

মাদক নারায়ণগঞ্জের বড় সমস্যা। প্রায়ই এনিয়ে অনেক খবর পত্র-পত্রিকায় আসে। এ ব্যাপারে আপনার কোনো কর্মপরিকল্পনা কি আছে? মাদকবিরোধী সচেতনতা তো নিয়মিত কাজের অংশ। সিটি করপোরেশন তো মাদকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে পারে। তারা তো আইন হাতে নিতে পারে না। মানুষকে সচেতন করার কাজ করে যাচ্ছি, যাবো।

জনসচেতনতায় আর কোন কাজকে গুরুত্ব দেবেন?

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করব। সব সময়ই করি। এবার মেয়র হতে পারলে প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি করব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

‘স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির স্বার্থে সরকারকে ভারসাম্যমূলক নীতি-উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’: ড. আতিউর রহমান

প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল আর্মিরা ধরে নিয়ে যাবে: ফরিদা খানম সাকি

দাম বাড়ালে এতক্ষণে কার্যকর হয়ে যেত: ক্যাব সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন

জন্ম থেকেই নারীদের যুদ্ধ শুরু হয়: নারী উদ্যোক্তা ফরিদা আশা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই

ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম করা উচিত: কাউন্সিলর আবুল বাশার

তদারকি সংস্থা এবং ভবন নির্মাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে: অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

বেইলি রোডের আগুনে রাজউকের ঘাটতি রয়েছে: মো. আশরাফুল ইসলাম

নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ভবন অনুমোদন দিতে হবে: ইকবাল হাবিব

বীমা খাতে আস্থা ফেরাতে কাজ করছি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :