নরসিংদীর ডিসির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:৫৫

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। নরসিংদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে সহস্রাধিক লোক জমায়েত হয়ে সোমবার এই বিক্ষোভ করে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মূল ফটকে এসে এক পথসভায় মিলিত হয় বিক্ষোভকারীরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী। পথসভায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও মহিলা লীগের নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তাগন নরসিংদী জেলা প্রশাসকের অসংখ্য দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতা অপব্যবহারের খতিয়ান তুলে ধরেন। এসময় মুহুমুহু কড়তালিতে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও আদালত কার্যালয়ের মূল ফটক প্রকম্পিত হয়ে উঠে। বক্তাদের বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘ডিসির দুই গালে, জুতা মার তালে তালে’, ‘তুই ডিসি কুলাঙ্গার, এ মুহূর্তে নরসিংদী ছাড়’, এসব শ্লোগানে মুখরিত করে তুলে নরসিংদী ডিসি রোড।

নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদীর মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, আমি নরসিংদীর মেয়র নির্বাচিত হওয়ার থেকে আজ পর্যন্ত এ শহরের মাটি ও মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। যারা কাজ করেন তাদের ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতেই পারে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক আমার বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। যার কোনো প্রমাণ তিনি সেখানে দিতে পারেননি। তিনি নরসিংদীর শত কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এক বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যুর হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তিনি স্থানীয় কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার একক কর্তৃত্ত স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। নরসিংদীতে অনেক গুণী মহিলা থাকা সত্ত্বেও তিনি পরিচয় গোপন করে তার মায়ের নাম রোকেয়া পদকের জন্য মনোনীত করে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তিনি স্বজনপ্রীতি করে অযোগ্য, অথর্ব ব্যক্তিদের বিভিন্ন আসনে অধিষ্টিত করেছেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন। যার অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে দেয়া আছে।

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লেঃ কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরুর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, নরসিংদী জেলা প্রশাসক একজন ধূর্ত ও দুর্নীতিগ্রস্ত একজন মানুষ। আমি ভাবতাম তিনি সৎ হবেন। কিন্তু গত ১৬ নভেম্বর দুদকের গণশুনানিতে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে ওনার মতো কর্মকর্তা নরসিংদীতে না থাকাই শ্রেয়। নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি কনফারেন্সে আছি। নরসিংদীতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে, এ সম্পর্কে আমার জানা নেই। আজ জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে আছেন যিনি তার সঙ্গে কথা বলুন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।

 নরসিংদী জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহবুব হোসেন শাহীনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)