পা দিয়ে লিখে সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে মুরসালিন

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর ২০১৬, ১০:১৫

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই মুরসালিন হোসেনের। তবু হাল ছাড়েনি সে, হাত না থাকলে লেখাপড়া করতে তো আর মানা নেই। তাই সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষাগ্রহণ করে পঙ্গুত্বের অভিশাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করার। সেই প্রত্যয়ে এ বছর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে মুরসালিন।

উপজেলার দৌলতপুর ইউপির দৌলতখালী বড়ভুইপাড়া ব্রাক স্কুল থেকে সে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

দৌলতখালী চোহদ্দিপাড়া গ্রামের দিনমজুর মিজানুর রহমানের ছেলে মুরসালিন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়।

একদিকে দরিদ্র, অন্যদিকে দুই হাত নেই। তাই কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার বাবা-মা পড়াতে সাহস পায়নি। ছেলের পড়ালেখার আগ্রহ দেখে বাড়ি সংলগ্ন ব্র্যাকস্কুলেই তাকে ভর্তি করে দেন। ব্র্যাকস্কুল থেকে প্রাথমিকের পড়াশোনা শেষ করে অবশেষে মুরসালিন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে।

বড়ভুইপাড়া ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া খাতুন জানান, মুরসালিনের লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে তাকে ওই স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল। তার স্মরণশক্তি ভাল এবং পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী।

মুরসালিনের মা হিরা খাতুন বলেন, গর্ভে থেকেই দুই হাতবিহীন জন্ম নেয় মুরসালিন। বহুকষ্টে তাকে দিনদিন বড় করে তোলা হচ্ছে। হাটাচলা ছাড়া তার সব কাজ সে তার মায়ের সাহয্যেই করে থাকে।

তার মা জানান, অভাবের সংসারে দু-বেলা দু-মঠো ভাত যোগাতে হিমসিম খেতে হয়। তাই ছেলের লেখাপড়ার খরচ ও জামা কাপড় দিতে পারি না। আবার ছেলের লেখাপড়ার ইচ্ছাশক্তিকেও ফেলতে পারছি না। তাই ভবিষ্যতে কি করব ভেবে পাচ্ছি না।

মুরসালিন জানায়, তার পরীক্ষা ভাল হচ্ছে। ফলাফল ভাল হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নুল আবেদিন জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যে সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে মুরসালিনকে সেভাবেই দেখা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩ নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :