ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচন

আওয়ামী লীগ বনাম জাসদ?

মনোনেশ দাস, ময়মনসিংহ
 | প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:২৪

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকে ময়মনসিংহে জেলা পরিষদ কেন্দ্র করে ভোটের প্রচারণা বেড়ে গেছে। বিভাগীয় শহরটিতে এই হাওয়া দিনকে দিন বাড়ছে। তবে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশীরাই বেশি মাঠে আছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়া ময়মনসিংহের নেতারাও এ বিষয়ে চুপসে গেছেন। জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় হতাশায় আছে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের স্থানীয় অনুসারীরা। ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল জাসদ (ইনু) নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তাদের কিছু নেতার তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। তাই এই জেলায় আওয়ামী লীগ বনাম জাসদ মেরুকরুণ তৈরি হতে পারে এ নির্বাচনে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন চেয়ে কেন্দ্রে আবেদন করেছেন বর্তমান প্রশাসক ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক, আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলু।

চেয়ারম্যান পদে জাসদের কয়েকজন নেতার নামও শোনা যাচ্ছে। এরমধ্যে আছেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাদিক হোসেন, জেলা জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু এবং ময়মনসিংহ মহানগর জাসদের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু।

তবে চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী কারা হচ্ছেন, তা জানতে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের কেন্দ্রের নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে। নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীরা গোপনে গোপনে অবশ্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে শুধু আওয়ামী লীগ মাঠে থাকলেও প্রার্থীর তালিকা বেশ লম্বা। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অনেক আগেই মাঠে নেমেছেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক বর্তমানে জেলা পরিষদের প্রশাসক পদেও রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিলের বাবা জহিরুল হক খোকা ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সমর্থন পেতে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। গত ১৬ নভেম্বর বুধবার বিকেলে ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ আবেদনপত্র জমা দেন।

আওয়ামী লীগের আরেক সমর্থন প্রত্যাশী ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলু গত ১৭ নভেম্বর প্রার্থী হিসেবে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। পরে তিনি বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান এবং তার পুত্র শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলুকে সমর্থন করছেন বলে গুঞ্জন আছে।

জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের ভেতর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। ইতিপূর্বে সংসদ উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদনির্বাচন নিয়ে এই দলের মাঠের নেতা- কর্মীদের বিভেদ এখানো বহাল।

ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে গ্রুপিং লবিং। দলের অভিজ্ঞমহল বলছে, এসবের কোনো দরকার ছিল না। জেলা পরিষদ নির্বাচনকে যেহেতু নির্দলীয় ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তাই এখানে কেন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থীদের আবেদন চাইল কেন্দ্র? বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টিও তো থাকছে না নির্বাচনে। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট কাউকে দলীয় সমর্থন না দিয়ে সবাইকেই নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া উচিত। সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন সত্যিকার অর্থে একটি নির্বাচনী আমেজ পাবে সবাই, তেমনি নিজস্ব যোগ্যতায় নির্বাচিত হয়ে আসবে প্রার্থীরা।

ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/প্রতিনিধি/টিএমএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :