কিশোরগঞ্জে রোপা আমনের বাম্পার ফলন

আমনিুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ
| আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০১৬, ১১:২০ | প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর ২০১৬, ১০:১৩

কিশোরগঞ্জে এখন নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের বাড়ি বাড়ি যেন সুবাস ছড়াচ্ছে। চলছে রোপা আমন কাটার ধুম। প্রতিটি ফসলের মাঠেই চলছে আমন কাটার উৎসব। বোরো মৌসুমে প্রখর রোদে কৃষকের গা পুড়লেও হেমন্তের এই মৃদু উষ্ণ সৌরতাপে দল বেঁধে কৃষকরা ক্লান্তিহীনভাবে কেটে যাচ্ছেন মাঠের সোনার ধান। কৃষকরা জমির পুরো ধান কেটে জমিতে কয়েকদিন বিছিয়ে রাখেন। ধান শোকানোর পর সেগুলো বাড়িতে নিয়ে মাড়াই করে গোলায় তোলেন।

কিশোরগঞ্জের প্রধান ফসল বোরো হলেও দ্বিতীয় সর্বাধিক ধান উৎপাদন হয় রোপা আমন। ১৩ উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং নিকলী- এই চারটি উপজেলা পুরোপুরি হাওর অধ্যুষিত। তারপরও কেবল মিঠামইন ছাড়া এবার বাকি ১২ উপজেলাতেই আমনের আবাদ হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এবার সারা জেলায় মোট ৭৪ হাজার ৮৬৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে উফশী ৬৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর, হাইব্রিড ১৫ হেক্টর, আর স্থানীয় জাতের ধান ৯ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৫ মেট্রিকটন। এর মধ্যে উফশী ধানের চাল ১ লাখ ৭৭ হাজার ১০১ মেট্রিকটন, হাইব্রিড ধানের চাল ৪৮ মেট্রিকটন আর স্থানীয় জাতের ধানের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৮৬ মেট্রিকটন। তবে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ৭৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪ হেক্টর বেশি। এরই মধ্যে ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে।

জেলা খামারবাড়ি সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ একটি ‘খাদ্য উদ্বৃত্ত’ জেলা। এখানে সারাবছর দানা জাতীয় খাদ্যশস্য উৎপাদন হয় প্রায় ৮ লাখ মেট্রিকটন। স্থানীয় চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিকটন। ফলে বছরে উদ্বৃত্ত থাকে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিকটন। এসব উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য সারাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে বিশাল ভূমিকা রাখে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবছর তাদের জমিতে আশাতীত ফলন হয়েছে। কারো কারো জমিতে ক্বদাচিৎ পোকার আক্রমণ হলেও সামগ্রিকভাবে এবার সারা জেলায়ই বাম্পার ফলন হয়েছে। কারণ এবছর দফায় দফায় বৃষ্টি হবার কারণে কারো জমিতেই সম্পূরক সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। যে কারণে জমি সবসময়ই রসালো ছিল। আমন ফসল এবার অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে। আর সেই কারণেই ভাল ফলন হয়েছে। তবে কৃষকরা ধানের ভাল দাম পান না বলে তাদের মধ্যে যথেষ্ট হতাশা ও বিরাজ করে।

সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিন জানান, সদরে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৫ শত ৫০ হেক্টর। অর্জিত ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৫ শত হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৩২০ মে.টন। তবে এবার আশা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৪ নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :