ভেজাল ওষুধের মামলার আসামি খালাস
‘দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার’
তদন্ত কর্মকর্তার ভুল তদন্ত ও বাদীর অদক্ষতার কারণে রিড ফার্মার ভেজাল সিরাপ পানে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় পাঁচজনের খালাসের ব্যাপারে বৈঠক ডেকেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সোমবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আজ দেখলাম তদন্ত কর্মকর্তার ভুল তদন্তের কারণে নাকি আসামিরা খালাস পেয়েছেন। এজন্য আগামীকাল দুপুরে একটি বৈঠক ডেকেছি।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যাদের ভুল তদন্তের কারণে আসামিরা খালাস পেয়েছেন তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দায়ীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
রিড ফার্মার টেমসেট সিরাপ (প্যারাসিটামল) এবং নিডাপ্লেক্স সিরাপ (ভিটামিন বি কমপ্লেক্স) খেয়ে কিডনি অকেজ হয়ে ২৫ শিশু মৃত্যু হয়েছে বলে ২০০৯ সালের ২১ জুলাই কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তর ওই ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এম আর খান এবং এইচ এস কে আলম ওই দুটি সিরাপের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করান।
২৯ জুলাই ড্রাগ টেস্টটিং ল্যাবরেটরি পরীক্ষার রিপোর্টে বলেন, এগুলোতে ক্ষতিকর ডাই ইথাইল গ্লাইকল মেশানো হয়েছে, যা মানুষের দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। উৎপাদন ব্যয় কমাতে রিড ফার্মা প্রোপাইলন গ্লাইকল ব্যবহারের পরিবর্তে এটা ব্যবহার করত।
এ ঘটনায় ড্রাগ সুপারিনটেনডেন্ট শফিকুল ইসলাম ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট ঢাকার একটি আদালতে রিড ফার্মার পাঁচ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেন। অভিযুক্তরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান, মিজানুরের স্ত্রী পরিচালক শিউলী রহমান, আব্দুল গণি, ফার্মাসিস্ট মাহবুবুল ইসলাম এবং এনামুল হক।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক তদন্ত কর্মকর্তা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলামের সমালোচনা করে বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা সঠিক নিয়ম মেনে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেননি এবং পরীক্ষার প্রতিবেদনও জমা দেননি। এছাড়া মামলা দায়েরের সময় যেসব পদেক্ষেপ নেওয়া উচিৎ ছিল, তা না নেওয়ায় তার অযোগ্যতা ও অদক্ষতাও আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। ওই সকল কারণে আসামিরা খালাস পেয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/এমআর)