সরকারি গাছ কেটে নিলেন প্যানেল মেয়র, পরে থানায়

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০১৬, ১৯:১৩

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র সিরাজুল কবিরাজ জাজিরা-নড়িয়া সড়কের স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৩০ বছরের পুরনো দুটি কড়ই গাছ কেটে নিয়েছেন। তবে বিষয়টি জানার পর স্থানীয় প্রশাসন গাছগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলজিইডির আওতাধীন জাজিরা-নড়িয়া সড়কের দুই পাশে সারি সারি কয়েক শতাধিক কড়ই গাছ রয়েছে। প্রায় ৩০ বছর আগে এগুলো রোপণ করা হয়। এর মধ্য থেকে দুটি গাছ নিজেদের লাগানো দাবি করে প্যানেল মেয়র ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল কবিরাজের ছেলে মতি কবিরাজ সেগুলো কেটে নেয়ার জন্য মঙ্গলবার শ্রমিক নিযুক্ত করেন। সেদিন বিকাল পর্যন্ত একটি গাছের অর্ধেক অংশ বাড়িতে নিয়ে যান তারা।


সংবাদ পেয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুকুল কুমার মৈত্র পুলিশ পাঠিয়ে বাকি গাছ কাটা বন্ধ করেন। কিন্তু বুধবার সকালে প্যানেল মেয়র সিরাজুল কবিরাজ নিজে উপস্থিত থেকে আবার গাছ কাটা শুরু করেন।


খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সিরাজুল জানান, স্থানীয় প্রশাসন, বন বিভাগসহ সবার অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের সঙ্গে কথা বললে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। পরে দুপুরে জাজিরা থানার পুলিশ গাছগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।


ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল কবিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়েই আমি গাছ কেটেছি। এখন যেহেতু ঝামেলা হয়েছে, তাই গাছ থানায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।’


উপজেলা বন বিভাগের ফরেস্টার সুধীর কুমার দেব শংকর বলেন, ‘সরকারি কোনো গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু গাছ কাটার জন্য আমাদের কাছে কেউ কোনো আবেদন করেনি।’


সরকারি গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনীহা প্রকাশ করেন তিনি।


এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী বিমলেন্দু সরকার বলেন, ‘গাছগুলো পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি অভিযুক্তদের সঙ্গে কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব না।’


জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, ‘আমি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি, তারা খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/মোআ)