চীনে রবীন্দ্রনাথের রচনাবলী প্রকাশ

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ২০:১৪

চীনে সম্প্রতি বাঙালি নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথের রচনা সংগ্রহ চীনা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। চাইনিজ ও বেঙ্গলি বিশেষজ্ঞদের শ্রম ও ভালোবাসায় বেঙ্গলি সার্ভিস অব চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের (সিআরআই) সহযোগিতায় ৩৩ ভলিউমে এ রচনা সংগ্রহ প্রকাশিত হয়েছে। এতে কবির কবিতা গান, রচনা, চিঠি, উপন্যাস ও ছোটগল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি চীনে রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশনা নয়, ’৯০ দশকে চীনে রবীন্দ্রনাথের নির্বাচিত রচনা চীনা অনুবাদে প্রকাশিত হয়েছে।

জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ একাধিকবার চীন সফর করেছেন এবং এতে তখন চীনা বুদ্ধিজীবী ও সমাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা এখন নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়া, স্টাডিজের অধ্যাপক ডং ইউচেনের প্রচেষ্টায় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরাসরি বাংলা থেকে চায়নিজ ভাষায় অনূদিত হয়ে কবির পূর্ণাঙ্গ রচনাবলী প্রকাশিত হয়। ১৭ জন অনুবাদকের একটি টিমের নিরলস প্রচেষ্টায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ সার্ভিস অব চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের (সিআরআই) পরিচালক উ গুয়াঙইউ, প্রফেসর বাই কেই ইউয়ান, প্রফেসর শি জিনগই, সিআরআই বেঙ্গলি সার্ভিসের মাদাম জং সাওলি, সিনহুয়া সংবাদ সংস্থার রিপোর্টার প্যান মিয়া জুহু এবং চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ ইউনশি।

আজও রবীন্দ্রনাথের লেখা চীনাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় এবং তার রচনায় ভালোবাসার মহান বাণী ধারণ করে আছে। চীনের জনগণ রবীন্দ্রনাথ এবং তার রচনাকে উচ্চমর্যাদা দিয়ে থাকে।

অধ্যাপক ডং ইউচেনের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র চীনা সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেননি, তিনি অনেক চীনা লেখককেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছেন। ডং বলেন, আমরা যখন তাকে পাঠ করি, আমাদের মনে হয় না এটি বিদেশি সাহিত্য, আমাদের মনে হয়, এতে আমাদের নিজেদের কথাই বলা হয়েছে।

তরুণ বয়সে রবীন্দ্রনাথ ১৮৮১ সালে এক রচনায় চীনে আফিম বাণিজ্য বিষয়ে তুলে ধরেন এবং এই লেখায় চীনাদের প্রতি তার গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি সুবিচারের প্রতি বলিষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন এবং জাপানে আর্ট ও সংস্কৃতির প্রতি টান থাকা সত্ত্বেও জাপান চীন আক্রমণ করলে তিনি এর নিন্দা জানান। কেউ যখন এই আক্রমণ সম্পর্কে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, এটি এশিয়াকে একত্রীকরণের প্রক্রিয়ায় তখন তিনি এই হামলাকে অন্যায় এবং আগ্রাসন বলে উল্লেখ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চীনে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কবি হিসেবে তিনি চীনা সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছেন। ভারতীয় ভাষা ও ইংরেজির পরে দ্বিতীয় ভাষা চাইনিজ, যে ভাষায় রবীন্দ্রনাথের রচনার বেশির ভাগ অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ চীনের সর্বত্র জুড়ে আছেন। চীনের নেতৃত্ব রবীন্দ্রনাথের মানবতা ও আদর্শকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। ১৯৫৪ সালের জুনে চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই যখন ভারত সফরে আসেন তখন তিনি বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্রনাথের ভালোবাসা এবং চীনের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার সমর্থন কখনোই ভুলবো না।’

সাম্প্রতিককালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপেং বলেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা গ্রন্থ পড়েছেন এবং তিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা উদ্ধৃত করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :