‘অবহেলায়’ রোগী মৃত্যু: ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর
রোগীর মৃত্যুর পর এ নিয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল। কেন তার এই পরিণতি হয়েছে, সে বিষয়ে স্বজনদের অনুনয় বিনয় উপেক্ষা করেছেন হাসপাতাল কর্মীরা। পরে ক্ষোভে শুরু হয় ভাঙচুর। আর খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটক করা হয় রোগীর এক স্বজনকে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামি ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে এই ঘটা ঘটে।
হাসপাতালে গিয়ে যানা যায়, রবিবার সন্ধ্যার দিকে আকরামুল হোসেন নামে ২৭ বছর বয়সী এক যুবক বন্ধুদের সঙ্গে এসে সেখানে ভর্তি হন। তিনি ডাক্তার মো. রেজাউল করিম খানের চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সোমবার দুপুরে আইসিউতে তার মৃত্যু হয়।
আকরামুলের বাড়ি শরীয়তপুরে। তিনি একটি বেসরকারি রঙ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
কেন আকরামুলের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে বারবার জানতে চেয়েও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো জবাব পাননি আকরামুলের বন্ধু ও স্বজনরা। পরে তারা হাসপাতালের নিচ তলায় ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় চিকিৎসক ও রিসিপশনের লোকজন ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান।
হাসপাতালে একজন নিরাপত্তারক্ষী জানান, নিচ তলার সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করার পর পর অভ্যর্থনা কক্ষের সবাই পালিয়ে যায়। পরে রোগীর স্বজনরা তিনটি কম্পিউটার, প্রিন্টার, চেয়ার এবং চিকিৎসকদের নাম ফলক ভাঙচুর করে তারা। বিশেষ করে যে চিকিৎসকের অধীকে আকরামুল ভর্তি হয়েছিলেন তার নামফলকও তুলে ফেলে তারা।
সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় প্রাণ হারানো আকরামুলের বন্ধু বিপ্লব হাসানের সঙ্গে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আকরামুলের মাথা ব্যাথা ছিল। এই ধরনের রোগীর কীভাবে মারা যায়? নিশ্চিতভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন হয়েছে।’
বিপ্লব বলেন, ‘আমারা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি আকরামুলের কী হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ কিছুই বেল না। ডাক্তারদের কাছেও যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের তো কাছেই ঘেঁষতে পারলাম না। মনে হয়, রোগী মারা গেছে, এখন আর টাকা নেয়া যাবে না তই তারা পাত্তা দিচ্ছে না।’
বিপ্লব জানান, তার বন্ধুর এমআরআই করার পর আইসিউতে নেয়া হয়। অথচ বলা হয় রোগী আগেই মারা গেছে। তাহলে তার এমআরআই করা হলো কেন?
এ বিষয়ে অবশ্য ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে রোগীর স্বজনদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এগুলো টাকা না দেয়ার ফন্দি।’ এই পর্যায়ে হাসপাতালে আসা পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘যারা ভাঙচুর করেছে, তাদের ধরেন।’
পরে ঘটনাস্থল থেকে রোগীর স্বজন পরিচয় দেওয়া একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/আরআই/ইএস/ডব্লিউবি)