চুল যখন দেবতার অর্ঘ্য
ভারতের তামিল নাড়ুর থিরুথানি মুরুগান মন্দিরে নাপিতরা বসে থাকে সারে সারে। ভাবছেন মন্দিরে কে আসে আবার চুল দাড়ি কাটাতে? অবশ্য দাঁড়ি নয়, তারা মূলত চুল কামাতে আসেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, চুল কাটাতে নয়, কামাতে।
চুল ফেলে দিতে এরা মন্দিরে আসেন না। মন্দিরকে উপহার হিসেবে নিজেদের চুল দান করতে আসেন ভক্তরা।
আশে পাশের নানান গ্রাম থেকে লোকজন জড়ো হয় মুরুগান মন্দিরে, বিশেষ করে নারীরা। তারপর নাপিতকে দিয়ে মাতার সমস্ত চুল ফেলে ন্যাড়া হয়ে যায়। আর ফেলে দেয়া চুল জমা দেয় মন্দিরের সেবায়েতের কাছে। এই চুল হলো দেবতার অর্ঘ্য। একে বলে তোনসার।
যে কোন বয়সের নারী শিশু তোনসার করতে পারে। তরুণী থেকে বৃদ্ধা সবাই আসে সেখানে। নিয়ে আসা হয় শিশুদেরকেও। চুল ফেলে দিয়ে মনে মনে চাওয়া যায় যে কোন কিছু।
বলা হয়, ভক্তের মনের ইচ্ছা পূরনের অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে মুরুগান মন্দিরের। আর সেইজন্যই চুল ফেলতে আসা নারীদের ভিড় আর কমে না।
ভাবছেন ন্যাড়া মাথার চুল দিয়ে আবার কী হয়? ওগুলো কিন্তু মোটেই ফেলনা নয়। নিলামে চড়া দাম হেকে চুল বিক্রি হয়। আর চুল কিনে নেয় পরচুলা তৈরির কোম্পানিগুলো। তারপর এই চুল থেকে তৈরি হয় খুবই দামী পরচুলা।
এই পরচুলা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। কেন না আসল চুলের তৈরি পরচুলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ওখানে। এভাবে মন্দিরে ভক্তদের দানের চুল আসলে শোভা পায় ভিনদেশে অন্য কোনো নারীর মাথায়।
ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/কেএস/ডব্লিউবি