ফেনী পাইলট হাইস্কুলের দুর্দশা কাটছে না
নামে পাইলট হলেও পরীক্ষার ফল, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার ঐতিহ্যবাহী ফেনী পাইলট হাইস্কুলে গত ১০ বছরেও শিক্ষক সংকট নিরসন হয়নি। একইভাবে ভবন সংকটের কারণে ঠাঁসাঠাঁসি করে ছাত্রদের শ্রেণিকক্ষে বসতে হয়। শিক্ষক সংকটের ফলে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ‘ঘ’ শাখাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগের ব্যবহারিক বিষয়ে পাঠদানের জন্য শ্রেণিকক্ষ নেই। কক্ষ সংকটের কারণে বিজ্ঞান ভবনে ক্লাস নিতে হয় শিক্ষকদের। একজন শিক্ষককে প্রতিদিন গড়ে ৭/৮টি ক্লাস নিতে হয়। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে।
ইংরেজি বিষয়ে ছয় জনের বিপরীতে ৩ জন, বাংলা বিষয়ে ৬ জনের বিপরীতে ১ জন, জীব ও পদার্থ বিজ্ঞানে ১ জন শিক্ষক রয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে ডাবল শিফট চালু করা হলেও অদ্যবধি বিধিতে থমকে আছে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া।
২০১৭ সালে এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩শ ৩জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে মনিং শিফট ও দুপুর ১২টা থেকে দিবা শিফট চালু হয়। দুই শিফটের জন্য ৫২ জন শিক্ষকের বিপরীতে প্রধান শিক্ষকসহ ২৪ জন শিক্ষক রয়েছে। হিসাব বিজ্ঞান, ফিন্যান্স, বাংলা, জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে রয়েছে মাত্র একজন শিক্ষক। এতে করে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ছুটছে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটের দিকে।
একাধিক অভিভাবক জানান, তুমুল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীরা এ স্কুলে বিপুল আগ্রহ নিয়ে ভর্তি হয়। শিক্ষক ও শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারণে নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম না হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়ে। সববিষয়ে যথারীতি পাঠদান না হওয়ায় স্কুলে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ভবন সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে একটি শাখা বন্ধ করে দেয়ার কথাও স্বীকার করেন অকপটে।
প্রধান শিক্ষিকা আরো বলেন, শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
শ্রেণি কক্ষ সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত পুরনো লাল ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় শ্রেণি কক্ষ সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণের জায়গা থাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে আগ্রহী হলে এ সংকট কেটে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন জানান, এখনো সরাকারি স্কুলগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না।
(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন