নারী ভোটারদের কারণে এগিয়ে থাকার স্বপ্ন আইভীর

আমির হুসাইন স্মিথ, নারায়ণগঞ্জ
| আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:১১ | প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:১১

ভোটারদের প্রায় অর্ধেক নারী। নিজে নারী হওয়ায় এবং সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালনের সময় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিপুল সংখ্যক নারী সম্পৃক্ত হওয়ায় নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার আশায় আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী। তবে ছেড়ে কথা বলতে চান না বিএনপির শাখাওয়াত হোসেন খানও। নারীদের সমর্থন পেতে প্রচারণায় নামিয়েছেন বিএনপির নারী কর্মীদের। নিজের সঙ্গে প্রচারেও রাখছেন মেয়েদেরকে।

আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বলছেন, নারী হওয়ায় বাড়ির অন্দরমহলে গিয়ে প্রচারণার সুবিধাটি অনায়াসে পেয়ে যাচ্ছেন আইভী। তাই নারী ভোটারদের সমর্থন আদায়ও সহজ হচ্ছে তার জন্যে। যেটি সম্ভব হচ্ছে না প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে।

বিএনপি সমর্থকরা অবশ্য বলছেন, আইভী যে সুবিধা পাওয়ার কথা বলছেন, সেটা ব্যাপার না। তাদের দাবি, নারীদের মধ্যে এমনিতেই বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি। তারা ভোট দেবেন মার্কা দেখে, কে নারী-কে পুরুষ এটা বিবেচ্য হবে না।

সরকারি তোলারাম কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী নবীন ভোটার মরিয়ম আক্তার আইভীর সমর্থক। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, একজন নারী মেয়র হলে তার কাছে যে কোন প্রয়োজনে যাওয়া সহজ। একজন পুরুষের কাছে গিয়ে সব কিছু বলা যায় না। এসব কিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, নারী প্রার্থী অবশ্যই নারী ভোটারদের পছন্দে এগিয়ে থাকবেন।

একই কলেজের বাংলা অনার্সের ছাত্রী আফরিন আক্তারও আইভীকে ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি নারী পুরুষ বিবেচনা করি না। আমি বিবেচনা করি ভালো মানুষ। দুইজনের মধ্যে সেলিনা হায়াৎ আইভী ভালো কাজ করেছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নারীদের সম্পৃক্ত করেছেন। সেসব বিষয় বিবেচনা করে আমার পছন্দে রয়েছেন আইভী।’

নারীদের মধ্যে সাখাওয়াতের জনপ্রিয়তাও যে কম না, সেটা বোঝা গেলো ইসদাইর এলাকার জেসমিন আক্তারের কথায়। তিনি বলেন, ‘সাখাওয়াত হোসেন খান একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। নিযার্তিত নারীদের পক্ষে আইনি সহায়তা দিয়েছেন । এসব কারণে তিনি আমার পছন্দের প্রার্থী।

অন্দরমহলে আইভী যাচ্ছেন নিজে, সাখাওয়াত পাঠাচ্ছেন কর্মী

গত রবিবার আইভী সিদ্ধিরগঞ্জের ওয়াপদা কলোনি এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দা নাজমা আক্তার। তার খুব ইচ্ছে ছিলো আইভী তার বাসায় একবার আসবেন। তার সে ইচ্ছে পূরণও হয়েছে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের যাওয়ার পথে তিনি নাজমা আক্তারের বাসায় ঢু মেরে যান। কথা বলেন আশেপাশের নারীদের সঙ্গেও।

আইভীর সমর্থকরা বলেন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে থাককালে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে নারীদের জন্য কাজ করেছেন তিনি। গত পাঁচ বছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে প্রায় এক লাখ নারী বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত হন। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক উন্নতি হয়েছে। এসব কাজের সুফল আইভী ব্যালট বাক্সে তুলতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকাটাইমসকে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘আমি সিদ্ধিরগঞ্জে নারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমার বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য তারা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। আমি অবশ্যই আশা করি, অতীতের মতো এবারো তারা আমাকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দেবে।’

তবে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনও কম যাচ্ছেন না। তিনি তার নারী কর্মীদের মাঠে নামিয়েছেন। নারী কর্মীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে পাঠাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। তারা বাড়ির ভেতরে যাচ্ছেন। ভোট চাইছে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে।

শাখাওয়াত ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমিও নারীর পক্ষে ছিলাম সব সময়। অতীতে যৌতুকবিরোধী আইনের দাবিতে আন্দোলন করেছি। নারীদের অধিকার বিষয়ে আন্দোলন করেছি। আমি নারীদের কাছে গিয়ে আমার এসব অতীত কর্মকা-ের কথা বলছি। নারীদের ভোট আদায়ে আমি কোনো অংশে পিছিয়ে নেই বলে আমি মনে করি।’

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটারের সংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। যার মধ্যে দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন নারী।

ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :