সাংসদ রানার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে আবার বাদ
হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার জামিন আবেদন হাইকোর্টের কার্যতালিকা থেকে আবার বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এই আদেশ দেয়।
আদালতে রানার পক্ষে ছিলেন আব্দুল বাসেত মজুমদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন রানা। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহম্মেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
এ মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ১৪ জনকে আসামি করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ৬ এপ্রিল আসামিদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমিনুল ইসলাম।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রানার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা। অন্য আসামিরা হলেন- আনিসুল ইসলাম রাজা, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চান, নুরু, সানোয়ার হোসেন, দাঁতভাঙা বাবু, ফরিদ হোসেন, আবদুল হক ও সমির হোসেন।
আসামিদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমির হোসেন আগেই গ্রেপ্তার হয়ে টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। ফরিদ হোসেন কিছুদিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। আর আবদুল হক পলাতক অবস্থায় কয়েক মাস আগে দুষ্কৃতকারীদের হাতে নিহত হন। আসামিদের বর্ণনায় ফারুক হত্যা
২০১৪ সালের ১১ আগস্ট শহরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ফারুক আহম্মেদ হত্যা মামলায় প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় আনিসুল ইসলাম রাজাকে। একই অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামের আরো একজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গত ২৪ আগস্ট গ্রেপ্তার করে। তারা দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তারা বলেন, ফারুক হত্যায় টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান কাকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত।
আসামি রাজা আদালতে বলেন, ঘটনার দিন (২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি) ফারুক আহম্মেদকে ডেকে আনতে তাকে নির্দেশ দেন সংসদ সদস্য রানা। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে রানা ও ফারুক আহম্মেদের কথা হয়। রানা ফারুককে ওই পদে প্রার্থী না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ফারুক এতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ফারুক সেখান থেকে বের হলে সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। এ সময় অন্যরা তার মুখ চেপে ধরেন।
ফারুকের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর রানার নির্দেশে সেখান থেকে রক্ত মুছে ফেলা হয়। পরে একটি অটোরিকশায় করে ফারুকের বাসার কাছে মরদেহ ফেলে দেয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/এমএবি/ডব্লিউবি)