তিন বাহিনীর প্রধানের মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৬:০৫ | প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:০০

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে সরকার। এখন থেকে তিন বাহিনীর প্রধানের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ চার বছর। সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম এ কথা জানান।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রতিরক্ষা-বাহিনী প্রধান (নিয়োগ, অবসর এবং বেতন ও ভাতাদি) আইন, ২০১৬ সখড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এতেই তিন বাহিনীর প্রধানদের সর্বোচ্চ মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। নতুন আইনের ৪ ধারায় রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ দেবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এতদিন তিন বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ, অবসর ও বেতন-ভাতাদি জেএসআই নামে বিশেষ এক নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত হতো। এখন এটি এ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

মোশাররফ বলেন, ‘তিনি বাহিনী প্রধানদের মেয়াদ নিয়ে আগে সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম ছিল না। এখন তারা সর্বোচ্চ চার বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তবে সর্বনিম্ন মেয়াদ কত সে বিষয়ে এই আইনে কিছু বলা হয়নি। তিন বাহিনী প্রধানেরাও অন্যান্য সরকারি চাকুরিজীবীদের মতো এক বছর পিআরএল ভোগ করবেন। তবে তারা পরিবারসহ রেশন সুবিধা, সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা ভোগ করবেন।’

প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, তিনবাহিনী প্রধানের বেতন হবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বেতনের সমান- ৮৬ হাজার টাকা। এছাড়া তারা অন্যান্য ভাতাও পাবেন। এছাড়া বাড়ি, গাড়ি ও সহায়ক জনবল সুবিধাও পাবেন তারা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় সেনাপ্রধান ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে সাত বছর দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

এ ছাড়া মঈন উ আহমেদ ২০০৫ সালের ১৫ জুন থেকে ঠিক চার বছর সেনা প্রধান পদে ছিলেন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পাওয়া ১৭ জন সেনাপ্রধানের মধ্যে এরশাদের পরের আতিকুর রহমান তিন বছর ১১ মাস এবং নুরুদ্দিন খান তিন বছর সাত মাস দায়িত্ব পালন করেছেন। বাকিরা এর চেয়ে কম।

সেনা প্রধানদের মধ্যে সবচেয়ে কম সময় দায়িত্বে ছিলেন খালেদ মোশাররফ। তিনি ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর থেকে মাত্র চারদিন দায়িত্বে ছিলেন। এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেয়া খালেদ তার পদ হারান আরেক অভ্যুত্থানে।

বিমান বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন জামাল উদ্দিন আহমেদ এবং সুলতান মাহমুদ। জামাল উদ্দিন ১৯৯৫ সালের ৪ জুন থেকে ২০০১ সালের ৪ জুন পর্যন্ত এবং সুলতান মাহমুদ ১৯৮১ সালের ২৩ জুলাই থেকে ১৯৮৭ সালের ২৩ জুলাই পর্যন্ত ছয় বছর দায়িত্ব পালন করেন।

পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা বিমান বাহিনীর ১৪ জন প্রধানের সবাই এর চেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে কম সময় দায়িত্ব পালন করেন খাদেমুল বাশার। তিনি ১৯৭৬ সালের ১ মে থেকে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার মাস চার দিন দায়িত্বে ছিলেন।

নৌ বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্বে ছিলেন সুলতান আহমেদ। তিনি ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট থেকে ১৯৯০ সালের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ছয় বছর ১০ দিন দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া মাহবুব আলী ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর থেকে ১৯৮৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত চার বছর নয় মাস দায়িত্ব পালন করেন।

এই বাহিনীর ১৮ জন প্রধানের মধ্যে বাকি সবার মেয়াদ ছিল এর চেয়ে কম চার বছরের কম।

আর সবচেয়ে কম সময় ধরে নৌপ্রধানের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তার নাম মোহাইমিনুল ইসলাম। তিনি ১৯৯১ সালের ৩ মে থেকে এক মাস মাত্র দায়িত্বে ছিলেন।

মন্ত্রিসভার অন্যান্য সিদ্ধান্ত

বৈঠকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন- ২০১৬, বীজ আইন-২০১৬ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আইন দুইটি ইংরেজিতে ছিল, বাংলায় করা হয়েছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন, ২০১৬ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সীমান্ত হাট স্থাপন ও পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক নবায়ন ও পুন: স্বাক্ষরের জন্য খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০১০ সালে সীমান্ত হাট শুরু হয়। ওই সময় তিন বছরের জন্য চুক্তি হয়েছিল। সেই সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন নতুন করে চুক্তি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে চুক্তির মেয়াদ তিন বছর থেকে চার বছ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এ ছাড়া বর্তমানে চারটি সীমান্ত হাট থাকলেও এই সংখ্যা হবে ছয়টি। নতুন দুটি হাট হচ্ছে মৌলভীবাজার ও কমলগঞ্জে।

এসব হাটে দোকান সংখ্যা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। এছাড়া দাম ১০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলার করা হয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে শুরুতেই থাইল্যান্ডে পাওয়া আইটিইউ পুরস্কার প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এরপর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল ও ভারতের মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব করা হয় মন্ত্রিসভায়।

ঢাকাটাইমস/১২ডিসেম্বর/এমএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রশাসন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রশাসন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :