লক্ষ্মীপুরে বন বিভাগের গাছ লুট, বেপরোয়া ‘সিন্ডিকেট’

ইউছুফ আলী মিঠু, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:১৫

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে একের পর এক সরকারি গাছ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ‘আতাঁত’ করে রাতের আধারে বিভিন্ন সড়ক থেকে বন বিভাগের এ গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন।

এসব বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল প্রতিবাদ করলেও প্রতিকার কিছুই হচ্ছে না। বরং বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের ‘সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডেকেটটি’ দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

সর্বশেষ ওই সিন্ডেকেটের সদস্যরা ১২ ডিসেম্বর ভোর রাতে উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের করতইতলা কোম্পানি সড়কের একটি মূল্যবান রেইনট্রি গাছ কেটে নেয়।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, সোমবার ভোর রাতে ওই সিন্ডিকেটের সদস্য জামাল উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি করতইতলা কোম্পানি সড়ক থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা মূল্যের ওই রেইনট্রি গাছটি কেটে কাছের মারফত উল্যার স’মিলে নিয়ে রাখেন।

স’মিল মালিকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এ সময় স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জামাল উদ্দিন নামে ওই ব্যক্তি উপজেলা বন বিভাগের নার্সারি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষ্ণ কমল মজুমদার ও পিএম (বাগান মালী) সাইফ উদ্দিন মানিকের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। এ সুবাদে তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে জামাল উদ্দিন কোম্পানি সড়ক ও করইতলা-চৌধুরী বাজার সড়ক থেকে রাতের আধারে একাধিকবার সরকারি গাছ কেটে নিয়েছেন।

জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগে উপজেলা বন বিভাগের নার্সারি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষ্ণ কমল মজুমদার উপজেলার ফজুমিয়ার হাট-চরবসু সড়ক থেকে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ১০ থেকে ১২টি গাছ কেটে কিছু অংশ বিক্রি করে দেন। বাকি গাছগুলো বিক্রি করার উদ্দেশ্যে ওই এলাকার তার এক ভগ্নিপতির বাড়িতে স্তুপ করে রেখেছেন।

এছাড়াও গত নভেম্বর মাসে চরলরেন্স ইউনিয়নের আমানিয়া সড়ক থেকে বন বিভাগের পিএম (বাগান মালী) সাইফ উদ্দিন মানিক ও জামাল উদ্দিন তিনটি রেইনট্রি গাছ কেটে বেপারীদের কাছে বিক্রি করে দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে এভাবে প্রায়ই উপজেলার বিভিন্ন সড়ক থেকে সরকারি গাছ লুট হলেও এর কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে জানান, স্থানীয় একটি মসজিদে দান করার জন্য উপজেলা বন বিভাগের নার্সারি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষ্ণ কমল মজুমদারের নির্দেশে তিনি সোমবার ভোরে ওই গাছটি কেটে স’মিলে নিয়ে রেখেছেন। এর আগে ওই কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি আরও একটি গাছ কেটে স্থানীয় মাদ্রাসায় দান করেন। এ ছাড়া আর কোনো গাছ কেটে নেওয়ার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা বন বিভাগের পিএম (বাগান মালী) সাইফ উদ্দিন মানিকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে উপজেলা বন বিভাগের নার্সারি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষ্ণ কমল মজুমদার অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে জানান, এসব গাছ লুটের সঙ্গে তিনি মোটেও জড়িত নন। বরং তদন্ত করে ওইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :