৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা মেলেনি রতন মুন্সির

প্রকাশ | ২১ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:১৬

শেখ খলিলুর রহমান, শরীয়তপুর

স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পায়নি শরীয়তপুরের রতন মুন্সির। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জাতিকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভারতের আগরতলা বাগমারা ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার শিবচরে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে হানাদারমুক্ত করেন। ঢাকা স্টেডিয়াম ক্যাম্পে অস্ত্র জমা দিয়ে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই তালিকাও নাম রয়েছে তার আবেদনও করেছেন তিনি। কিন্তু শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে মুক্তি ভাতার তালিকায় নাম না উঠায় দুঃখ প্রকাশ করেন শরীয়তপুর সদরের পশ্চিম কাশাভোগ গ্রামের রতন মুন্সি। শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে জীবনের শেষ ইচ্ছে পূরণ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

রতন মুন্সির সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা মো. মোতালেব মিয়া, আ. মান্নান বয়াতি, মো. তৈয়ব আলী ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শিবচর উপজেলা কমান্ডার এবং দত্তপাড়া ইউনিয়নের কমান্ডার মোকলেচুর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রতন মুন্সিকে প্রত্যয়নপত্র দেন এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে নাম উঠানোর জন্য দাবি জানান।

পরিবার ও সহযোদ্ধাদের সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতাযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তৎকালীন ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহাকমা শিবচর থানার উত্তরচর তাজপুর গ্রামের মৃত. মোনতাজ উদ্দিন মুন্সির ছেলে রতন মুন্সি। ভারতের আগরতলা বাগমারা ক্যাম্পে কর্নেল এস.এস থাবার নেতৃত্বে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে ফিরেন। পরে মাদারীপুরের শিবচরের মেজর খসরুর নেতৃত্বে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে শিবচরের বিভিন্নস্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরে ঢাকা স্টেডিয়াম ক্যাম্পে অস্ত্র জমা দেন এবং মাদারীপুরের যাচাই-বাছাই তালিকায়ও ৪৬১নং নাম রয়েছে তার। ১৯৭২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা থেকে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অবসর নেন রতন।

চাকরি জীবনে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না করতে পারায় ২০১৪ সালের মে মাসের ২৭ তারিখে অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধা নিবন্ধন ফরমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে নাম উঠেনি- এমন অভিযোগ রতন মুন্সির।

রতন মুন্সি বলেন, চাকরি জীবনে সময়মতো আবেদন করতে না পারায় আমার নাম গেজেটে উঠেনি। এখন আমার জীবনে চাওয়ার মতো কিছুই নাই। সরকারের কাছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি চাই। তাহলেও মরে গেলেও শান্তি পাব।

বর্তমানে তিনি শরীয়তপুরে বসবাস করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২১ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)