ছাত্রত্ব শেষ ১৮ বছর আগে, তবু ছাত্রদলের নেতা

জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর
 | প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৮:৫৪

তারা ছাত্রত্ব হারিয়েছেন দেড় যুগ আগে। বিয়ে করেছেন বেশ আগে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার পেতেছেন। ব্যস্ত থাকেন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। তার পরও তারা ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত। এটি মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদলের কথা।

অছাত্রদের হাতে আটকে থাকায় নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। দীঘদিনের বঞ্চনা থেকে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। একসময়ের শক্তিশালী মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদল দিন দিন দুর্বলতর হয়ে পড়ছে।

ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র বলছে, অছাত্র, বিবাহিত ও অন্য পেশায় নিয়োজিতরা ছাত্রদলে থাকার যোগ্য হবেন না। কিন্তু মির্জাপুর ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ক্ষেত্রে তা কোনো কাজে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে মো. ফরিদ মিয়াকে সভাপতি ও সাইদুর রহমান শপথকে সাধারণ সম্পাদক করে মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। ছাত্রত্ব না থাকা, বিবাহিত ও সন্তান রয়েছে এমন দুই নেতাকে উপজেলা ছাত্রদলের শীর্ষ দুই পদে আসীন করায় তখন কমিটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. ফরিদ মিয়া ১৯৯১ সালে মির্জাপুর এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। পরের বছর পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন তিনি। এরপর মির্জাপুর কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বিদেশ চলে যান। কয়েক বছর বিদেশ থেকে ফিরে এসে ২০০৭ সালে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসি পাস করেন বলে দাবি করেন তিনি। ২০১২ সালে সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিএ পাস করেন বলেও জানান।

সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান শপথ ১৯৯৫ সালে সফিপুর আনসার একাডেমি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৯৭ সালে এইচএসসি পাস করার পর মির্জাপুর কলেজ থেকে ১৯৯৯ সালে বিএ পাস করেন বলে জানান তিনি। এরপর করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হলেও বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই তার। সাইদুর রহমান ২০১২ সালে বিয়ে করেন এবং তার তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

নব্বইয়ের দশকের এ দুই ছাত্রনেতা ছাত্রত্ব ছাড়াই ২০১৪ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্ব পান। দীর্ঘদিন আগে ছাত্রত্ব হারানোদের হাতে নেতৃত্ব থাকায় নতুন নেতৃত্ব উঠে আসতে পারছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা।

মির্জাপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিএসএস প্রথম বর্ষের ছাত্র আবিদ বলেন, ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ যে ছাত্রসংগঠনই হোক প্রকৃত ছাত্ররাই ছাত্রদের নেতৃত্ব দেয়া উচিত। এতে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। এটাই নিয়ম।’

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক অছাত্রদের ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেয়ার নিয়ম না থাকলেও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ মিয়ার দলের জন্য অনেক অবদান রয়েছে। এ কারণে তাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :