নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন: বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি রিজভীর
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কী হয়েছে তা নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ভোটে বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানে পরাজয়ের কয়েক ঘণ্টা পর দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এই কথা বলেন তিনি।
সকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রিজভী। তিনি বলেন, কোনো নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীর অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। তাই সাখাওয়াত যেহেতু গণনা নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন, তাই সেগুলো তদন্ত হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার ভোটের সকাল থেকে বিএনপি নজিরবিহীনভাবে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলেছিল। ভোটের সকালে রিজভী সংবাদ সম্মেলন করে এমনও বলেন, ‘আজ সম্ভবত আপনাদের সঙ্গে বেশি কথা বলতে হবে না। সকাল থেকে যে খবর পাচ্ছি ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট দিচ্ছে।’ দুপুরের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আজকের নির্বাচন সুষ্ঠু হলে গণতন্ত্র কিছুটা হলেও সতেজ হবে।’
বিকালে ভোট শেষে সংবাদ সম্মেলনেও রিজভী কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি। তবে তিনি বলেন, ভোটগ্রহণই শেষ কথা নয়। ভোট গণনা আর ফলাফল ঘোষণার আগেও কারচুপি করা সম্ভব। আর জনগণের রায় পাল্টে দেয়ার কোনো চেষ্টা যেন না হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করেন রিজভী। বলেন, ‘গণনার সময়ও সরকার তার প্রভাব বিস্তার করে ফলাফল পাল্টে দিতে পারে।’
তবে ভোটের ফলাফলে বিএনপির ৮০ হাজার ভোটে পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর রাতে আর সংবাদ সম্মেলন করেননি রিজভী। গণমাধ্যমকর্মীদের কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রেখে জানানো হয়, ‘ম্যাডামের নির্দেশ ছাড়া একটি ওয়ার্ডও বলা হবে না।’
তবে শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের প্রার্থীর কারচুপির অভিযোগ তদন্ত করা জরুরি। সেজন্য গতকালের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ, গণনা, ফলাফল- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আমি বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
আগের দিন ভোটকে সুষ্ঠু বললেও এখন কেন প্রশ্ন তুলছেন-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন শুনে রিজভী বলেন। ‘আজ কোনো প্রশ্ন নয়। আজ কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না। আগামীতে প্রশ্ন করবেন, উত্তর দেবো।’
তবে এই নির্বাচন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যেও জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। আমার সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু তারা সেনাবাহিনী মোতায়েন করেনি। নির্বাচনের ব্যালট পেপার থেকে শুরু করে সব কিছুই ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।’
ভোটাররা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন রিজভী। বলেন, ‘এই নির্বাচনে নানা রকমে অনিয়ম হয়েছে, যেটা গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে।’
রিজভী বলেন বলেন, ‘বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের বাতাবরণ সৃষ্টি করে সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সত্যিকার অর্থে গণরায়ের প্রতিফলন ঘটলে আমরা সেটিকে শুভেচ্ছা জানাই। তবে ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কারচুপির অভিযোগকে উড়িয় দেওয়া যায় না।’
ঢাকাটাইমস/২৩ডিসেম্বর/জিএম/ডব্লিউবি