কী যে বলবে কিছু খুঁজে পাচ্ছে না বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ২০:৩৩ | প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৯:০৯

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর বিএনপি আর কথা খুঁজে পাচ্ছে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি আজ কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছে না।’ সন্ধ্যায় গণভবনে নারায়ণগঞ্জের নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আইভীকে ভোট দেয়ায় ভোটারদেরকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যারা এমনকি চলতে পারে না তারাও এসেছে আইভীতে একটি ভোট দেয়ার জন্য। আমি সেই ভোটারদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন এবং যারা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই।’

নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ যে তিন জনের নাম পাঠিয়েছিল তাতে আইভীর নাম ছিল না। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী হিসেবে আইভীকেই বেছে নেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল, আস্থা ছিল জনগণের প্রতি, বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের মানুষদের প্রতি যে সুযোগ পেলে তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে, আইভীকে ভোট দেবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমার একটাই নির্দেশ ছিল, নির্বাচনটা হতে হবে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ। সাধারণ মানুষ ভোটটা যেন ভোটটা সঠিকভাবে দিতে পারে।’

বৃহস্পতিবার ভোট চলাকালে বিএনপি পরিবেশকে সুষ্ঠু বললেও ফলাফল ঘোষণার পর গণনার সময় কিছু একটা হয়েছে বল অভিযোগ করেছে। শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেন।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘(বিএনপি) কী যে বলবে, এখন খুঁজছে কোথায় কী হয়েছে। আবার দেখলাম জুডিশিয়াল ইনকোয়ারিও চাচ্ছে। মানে যখন কিছু না পায়, তখন তো একটা কিছু বলতে হয়। কিন্তু বলার আর মুখ নাই।’

বিএনপির আমলে নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা সংবিধান দখল করে মার্শাল ল জারি করে রাষ্ট্রপতি সায়েম সাহেবকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিতে বাধ্য করেছিলেন। ক্ষমতায় এসে হ্যাঁ, না ভোট দিয়েছেন ১৯৭৮ সালে। এরপর ৭৯ সালে দিলেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ওই নির্বাচনে শতভাগের ওপর ভোট পড়েছে। এরপর এলো সংসদ নির্বাচন। সেটা ছিল ছক বাঁধা নির্বাচন। আওয়ামী লীগকে কয়টা সিট দেবে, সেটা ঠিক করেই এই নির্বাচন করে তারা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আমলে ভোট চুরি এতো স্পষ্ট ছিল যে মানুষ প্রতিরোধ করলো। আন্দোলনে নামলো। ৯৬ সালের ৩০ মার্চ ভোট চুরির দায়ে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। এই কথাটা মানুষ ভুলে যায় কেন?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলীয় সরকারের অধীকে নির্বাচন যে সুষ্ঠু ও অবাধ করা যায়, আওয়ামী লীগ তা প্রমাণ করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করেছে। জনগণ যাকে ভোট দিয়েছে তারাই জিতেছে। তিনি বলেন, ‘পাঁচ সিটি নির্বাচনে তো তারা (বিএনপি) জিতেছে। আওয়ামী লীগ যদি ভোট কারচুপি করে তাহলে তারা জয়ী হবে কী বরে। জনগণ যাকে ম্যান্ডেট দিয়েছে আমরা মেনে নিয়েছি।’

নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এতোদিন যে অভিযোগ করে আসছে তার উপযুক্ত জবাব নারায়ণগঞ্জবাসী দিয়ে দিয়েছে। সেখানে অত্যন্ত চমৎকার একটা নির্বাচন হয়েছে।

শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হয়ে গেছে

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য দেয়ার সময় নারায়ণগঞ্জের নেতারা স্থানীয় উন্নয়নের বিষয়ে একটি ঘোষণা চান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সারা দেশের উন্নয়ন করছি। কোনো দাবিও বলা লাগবে না, বলাও লাগবে না।’

নারায়ণগঞ্জে বন্দর উপজেলা থেকে জেলা সদরে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। নির্বাচিত হওয়ার পরদিন সকালে আইভী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন, এই সেতু নির্মাণের বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হতক্ষেপ চাইবেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী এই সেতু নিয়ে কথা বলেন নিজে থেকেই। তিনি বলেন, ‘আইভী যে ব্রিজের কথা বলছে, সেই ব্রিজর কাজ তো শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।‘ এ সময় তিনি তার পাশে থাকা কর্মকর্তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওটা তো অনেক আগেই করার কথা। তাই না?’। কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জবাব পেয়ে আইভী বলেন, ‘ওই সেতুর কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। একনেকে অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’

আইভী মেয়র পদে পুননির্বাচিত হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরও গতি পাবে বলেও আশা করেন আইভী। বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির কেউ আসলে তো তারা লুটে খায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এতো অপরাধ করে গেছে তারপরও এই দেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেয় কী করে। অরথপাচারের দায়ে মামলায় এফবিআই সাক্ষী দিয়েছে। তার শাস্তি হয়েছে। তিনি আবার এতিমের টাকা মেরে এখন মামলা ফেস করতে ভয় পাচ্ছেন। তিনি দুইশ বারের মতো রিট করে কালক্ষেপণ করছেন। কেন?’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হয়ে কালোটাকা সাদা করেছেন তিনি (খালেদা)। কালোটাকা কোত্থেকে আসে দুর্নীতি ছাড়া? দুই ছেলে মানি লন্ডারিং করেছে বিদেশে ‘

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসলে উন্নয়ন স্থবির করে দুর্নীতি করে, মানুষ খুন করে, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ করে। বিরোধী দলে থাকলে আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করে। তাহলে তাদেরকে মানুষ ভোট দেবে কেন?’ তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকলেই যারা মানুষকে নির্যাতন করে খোদা না করেন তারা যাদি ক্ষমতায় যায় তাহলে যে কী করবে! উন্নয়ন তো বন্ধ করেই দেবে। এরা আবার ভোট চায় কী করে।’

(ঢাকাটাইমস/২৩ডিসেম্বর/ডব্লিউবি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

উপজেলা ভোটের মাঠে বিএনপির তৃণমূল নেতারা

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ: বিএনপির ৬৪ নেতাকে শোকজ

ভোটের মাঠ থেকে স্বজনদের সরাতে পারেননি আ.লীগের মন্ত্রী-এমপিরা

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে: বিএনপির আরও ৫ নেতা বহিষ্কার

সরকারকে পরাজয় বরণ করতেই হবে: মির্জা ফখরুল

এমপি-মন্ত্রীর স্বজন কারা, সংজ্ঞা নিয়ে ধোঁয়াশায় আ.লীগ

মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির আরও এক নেতা বহিষ্কার 

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :