আমেজহীন টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:২০

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদ নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আর কোনো উত্তাপ নেই। নির্বাচনী আমেজ হারানো এই নির্বাচনে এখন দায়সারাভাবে প্রচারণা করছেন সদস্য পদের প্রার্থীরা।

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগসমর্থিত প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া অন্য তিন প্রার্থীর মধ্যে দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও অন্যজন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফজলুর রহমান খান ফারুক বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন।

এখন নির্বাচনী মাঠে আছেন কেবল ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থীরা। সাধারণ ওয়ার্ডে অবশ্য দুজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ১৩টিতে ৫৩ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১৭ জন সদস্য প্রার্থীর প্রচারণায় নেই কোনো উত্তাপ। প্রার্থীরা মাঠে কাজ করছেন বটে, তবে ভোটররা বলছেন, নির্বাচন অনেকটাই আমেজহীন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হলেন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

নির্বাচনী এলাকার ওয়ার্ড

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদকে ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে টাঙ্গাইল পৌরসভা, করটিয়া, ঘারিন্দা ও গালা ইউনিয়ন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে মগড়া, বাঘিল, দাইন্যা, পোড়াবাড়ী, ছিলিমপুর, কাকুয়া, হুগড়া, কাতুলী এবং মাহমুদনগর ইউনিয়ন। ৩ নম্বরে আটিয়া, দেলদুয়ার, ডুবাইল, ফাজিলহাটি, লাউহাটি, এলাসিন, দেউলী, পাথরাইল, ভারড়া ও সহবতপুরে ইউনিয়ন। ৪ নম্বরে ভাদ্রা, দপ্তিয়র, ধুবড়িয়া, গয়হাটা, মাহমুদনগর, বেকড়া আটগ্রাম, সলিমাবাদ, নাগরপুর সদর, মোকনা ও পাকুটিয়া ইউনিয়ন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে আনাইতারা, বানাইল, ভাওড়া, ভাতগ্রাম, ফতেপুর, জামুর্কী, লতিফপুর, মহেড়া, উয়ার্শি, কাঞ্চনপুর ও হাবলা ইউনিয়ন। মির্জাপুর, বহুরিয়া, বাঁশতৈল, গোড়াই, তরফপুর, আজগানা ও হাতিবান্ধা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ড। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে বাসাইল পৌরসভা এবং বাসাইল, কাশিল, ফুলকী, কাউলজানী, যাদবপুর, দাড়িয়াপুর, সখিপুর, গজারিয়া ও বহুরিয়া ইউনিয়ন। ৮ নম্বরে বল্লা, নাগবাড়ী, পারখী, বীরবাসিন্দা, পাইকড়া, সহদেবপুর, কোকডহরা, বহেড়াতৈল, কাকড়াজান ও কালিয়া ইউনিয়ন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে কালিহাতী, এলেঙ্গা পৌরসভা, বাংড়া, নারান্দিয়া, সল্লা, দশকিয়া, দূর্গাপুর ও গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন। ভূঞাপুর পৌরসভা এবং অলোয়া, গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অর্জুনা, ফলদা, গাবসারা, লোকেরপাড়া ও আনেহলা ইউনিয়ন ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে ১০ নম্বর ওয়ার্ড।

ঘাটাইল পৌরসভা এবং ঘাটাইল, দেউলাবাড়ি, দেওপাড়া, দিঘলকান্দি, দিগড়, জামুরিয়া, ধলাপাড়া ও সাগরদিঘী ইউনিয়ন নিয়ে ১১ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে রসুলপুর, লক্ষিন্দর, সন্ধানপুর, সংগ্রামপুর, আলোকদিয়া, আউশনারা, কুড়ালিয়া ও মহিষমারা ইউনিয়ন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে অরণখোলা, শোলাকুড়ী, ফুলবাগচালা, গোলাবাড়ি, কুড়াগাছা, বেরীবাইদ, মধুপুর ও মির্জাপুর পৌরসভা। ধনবাড়ী পৌরসভা এবং বানিয়াজান, ধোপাখালী, বীরতারা, বলিভদ্র, যদুনাথপুর, পাইস্কা, মুশুদ্দি ইউনিয়ন নিয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। আর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে গোপালপুর পৌরসভা এবং ধোপাকান্দি, হাদিরা, ঝাওয়াইল, নগদাশিমলা, হেমনগর, আলমনগর ও মির্জাপুর ইউনিয়ন। সংরক্ষিত নির্বাচনী এলাকা

টাঙ্গাইল জেলাকে ৫টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড নিয়ে ১ নম্বর সংরক্ষিত আসন। ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে ২ নম্বর। ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড। ১০, ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড এবং ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ড নিয়ে ৫ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠিত।

আমেজহীন নির্বাচনের সদস্য প্রার্থীরা

চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় নির্বাচনী আমেজ অনেকটাই কমে গেছে। তবু সদস্য পদ ধরে রাখতে কোনোরকমভাবে মাঠে কাজ করছেন কেউ কেউ।

সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের টাঙ্গাইল সদরের আহমদ সুমন মজিদ (ঘুড়ি), মেহেদী হাসান ফেরদৌস (উট পাখি), আকরাম হোসেন কিসলু (হাতি), আবদুর রউফ (তালা), আসাদুজ্জামান পবন (টিউবওয়েল), সৈয়দ আরমান হোসেন (বৈদ্যুতিক পাখা)। ২ নম্বর ওয়ার্ডে টাঙ্গাইল সদরের ইকবাল আলম (ঘুড়ি), মোহাম্মদ ইয়াহিয়া দেওয়ান টিউবওয়েল, আজাদ দেওয়ান (হাতি), আমিরুল ইসলাম (তালা)। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দেলদুয়ারের খন্দকার হামীম কায়েছ বিপ্লব (টিউবওয়েল), গোলাম কিবরিয়া (উট পাখি), ফজলুল হক (তালা), প্রভাংশু রঞ্জন সোম (হাতি)। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরপুরের নার্গিস আক্তার (উট পাখি), মোহাম্মদ সাইদুর রহমান (হাতি), খালিদ হোসেন (ঘুড়ি), শহিদুল ইসলাম (টিউবওয়েল), সুরুজ খান (অটোরিক্সা), শেখ কামাল হোসেন (তালা)। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মির্জাপুরের আব্দুল্লাহ হেল শাফি (বৈদ্যুতিক পাখা), আনিছুর রহমান (হাতি), মঞ্জুর রহমান মজনু (অটোরিক্সা), মোস্তফা হোসেন চৌধুরী (টিউবওয়েল), শামীম কবীর (তালা)। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মির্জাপুরের নুরুল ইসলাম (হাতি), সাইদুর রহমান খান (তালা)।৭ নম্বর ওয়ার্ডে সখিপুরের খন্দকার কামরুল হাসান (হাতি), বাসাইলের তোফাজ্জল হোসেন খান (তালা)। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কালিহাতীর আরিফুর রহমান সিকদার (ঘুড়ি), বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী (টিউবওয়েল), আলী আকবর মিয়া (বৈদ্যুতিক পাখা), মোবারক হোসেন (হাতি), সখিপুরের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া (তালা)। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কালিহাতীর জমির উদ্দিন (হাতি), লিয়াকত আলী (তালা)। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভূঞাপুরের আজহারুল ইসলাম (হাতি), আব্দুল হামিদ মিয়া ভোলা (তালা)। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ঘাটাইলের আবু নইম মোহাম্মদ বজলুর রহীম (টিউবওয়েল), মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান (হাতি), মজিবর রহমান (বৈদ্যুতিক পাখা), শাহান শাহ সিদ্দিকী (তালা)। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মধুপুরের আব্দুল আজিজ (তালা), ঘাটাইলে সুলতান মাহমুদ (হাতি)। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গোপালপুরের মীর রেজাউল হক (টিউবওয়েল), আব্দুল কাদের তালুকদার (হাতি), খায়রুল ইসলাম (তালা) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে পৃথক পৃথক ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর আগে ১৩ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফিউদ্দিন মনি ও ১৪ নং ওয়ার্ডে ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম মঞ্জু একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। ফলে উভয় সদস্যই বিনা পতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৩ ও ১৪ নং ওয়ার্ডে দুজন বিজয়ী হওয়ায় বাকি ১৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে ১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য পদে প্রতিদন্দ্বিতা করছেন টাঙ্গাইল সদরের আমেনা আক্তার মিনু আনোহলী (বই), উষা আকতার (ফুটবল), খন্দকার দিলরুবা করিম (হরিণ), নাজমুজ সালেহীন (দোয়াত কলম), নাসিমা আক্তার (টেবিল ঘড়ি), ফেরদৌসী আক্তার রুনু (কম্পিউটার), মীর ফাহমিদা জেরিন (মাইক)। ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নাগরপুরের ছাইদা ইয়াছমিন (দোয়াত কলম), মির্জাপুরের সালমা সালাম উর্মি (ফুটবল)। ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কালিহাতীর আছমা খান (বই), রোকেয়া সুলতানা (ফুটবল), সখীপুরের রুমা খান (হরিণ), বাসাইলের শাম্মী আক্তার মুক্তি (দোয়াত কলম)। ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভূঞাপুরের নাছিমা বাছিত (হরিণ), ঘাটাইলের রাজিয়া হোসেন (টেবিল ঘড়ি)। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ধনবাড়ীর মাহমুদা খাতুন (হরিণ), গোপালপুরের হাসনা হেনা (দোয়াত কলম) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছি।’ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে উন্নয়নের জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলে মোট এক হাজার ৬১১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :