স্বাগত ২০১৭, জঙ্গিমুক্ত হোক নতুন বছর

প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০১৭, ০০:০০

আরিফুর রহমান

শুরু হয়েছে ইংরেজি নতুন বছর। রাত ১২টায় দেশে দেশে জ্বলে উঠেছে নানা বরন  আতশবাজি। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার কারণে গ্রেগরিয়ান নতুন বছর পালনের উৎসবে শামিল হয়েছে সবাই। আনন্দ করছি আমরাও। তবে উৎসবের উন্মাদনা যাতে মাত্রা ছাড়িয়ে না যায় এ কথাও মনে রাখতে হবে আমাদের।

সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

বছরের প্রথম দিন আমাদের দেশের শিশু-কিশোরদের জন্য এখন বই উৎসব। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয় এই দিন। এরই মধ্যে শিশুরা আগের বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে গেছে। এবার পঞ্চম শ্রেণি (পিইসি) ও অষ্টম শ্রেণির  (জেএসসি) জাতীয় পরীক্ষায় দারুণ ফল করেছে তারা। আজ সবাই হাতে পাচ্ছে নতুন বই। আবার পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়বে তারা। নতুন বছরের প্রথম দিন শিশুদের নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেয়ার আনন্দ সারা বছর ধরে থাকুক তাদের, তেমনি আনন্দ থাকুক আমাদের মধ্যেও। এই প্রত্যাশা আমাদের।

কিন্তু আনন্দ যাপনের আগে, পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে যখন সবাই প্রস্তুত, তখন গাইবান্ধা-১ আসনের সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিজ বাসায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।  বছরের শেষ দিন সূর্যাস্তের পরপর তার বাসায় ঢুকে খুনিরা তাকে হত্যা করে নির্বিঘেœ চলে যায়। 

এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তাৎক্ষণিক তা জানা যায়নি।  তবে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি জামায়াত-শিবিরকে সন্দেহ করছেন এই হত্যাকা-ে। আর স্থানীয় প্রশাসন জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে মাথায় রাখছেন জঙ্গিদের কথাও।

এমপি লিটন হতার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  যারাই এই হত্যাকা-ে জড়িত থাকুক, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছি আমরা।

গত বছরটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরল সুস্থিরতা ছিল, যা দেশের উন্নয়নের জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক একটা দিক। কিন্তু নানা সময়ে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনা সরকার, বিরোধী দলসহ সব মহলকে চিন্তিত করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ পাবনা, রংপুর, গাইবান্ধা- দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন অনেক দেশি-বিদেশি। এসব ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনামের হানি হয়েছে, তা বলার অবকাশ রাখে না।

মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার দিকে ধাবমান বাংলাদেশের নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন বিশ্বের কাছে যখন এক নজির হয়ে উঠেছে, বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি যখন বাংলাদেশের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে, তখন এ ধরনের হত্যা কিংবা জঙ্গি হামলার ঘটনা ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। অবশ্য এটা ঠিক যে বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রশাসন যথেষ্ট সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। কিন্তু তারপরও এমপি হত্যার মতো ঘটনা আমাদের না ভাবিয়ে পারে না। 

আমরা চাই জঙ্গিমুক্ত, হানাহানিমুক্ত বাংলাদেশ। উন্নয়নের বাংলাদেশ। আশা করি সরকার ও প্রশাসন এ ব্যাপারে তৎপর হবে।

নতুন বছরে আমাদের পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, লেখক ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক  শুভেচ্ছা।

সম্পাদক: ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়