ছাত্রলীগের শোভাযাত্রায় তীব্র যানজট, গাড়ি ছেড়ে হাঁটছে মানুষ
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে ভুগলো রাজধানীবাসী। সকাল থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসা নেতা-কর্মীদের চাপে স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। আর বেলা ১১টার কিছুক্ষণ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত শোভাযাত্রায় যান চলাচল বন্ধ থাকে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। এতে তীব্র আকার ধারণ করে যানজট।
এই কর্মসূচির কারণে রাজধানীর প্রেসক্লাব থেকে শাগবাগ পর্যন্ত অংশে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আর এই সড়ক বন্ধ থাকার প্রভাব গিয়ে পড়েছে আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে এক পর্যায়ে যাত্রীদের একাংশ গাড়ি ছেড়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা হয়। হাঁটতে অনভ্যস্ত রাজধানীবাসীর জন্য এটা এক বিড়ম্বনা।
যাদের হাঁটার উপায় ছিল না, তাদের জন্য বিড়ম্বনা আরও বেশি। বিশেষ করে যাদের জরুরি কাজ রয়েছে, তারা পড়ে দুশ্চিন্তায়।
মূল সড়কে চলতে না পারা গাড়িগুলো এক পর্যায়ে যাওয়ার চেষ্টা করে আশেপাশের সড়ক ধরে। আর এই চেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পাশে বকশিবাজার, ঢাকা মেডিকেল মোড়, পলাশী, নীলক্ষেত এলাকাতেও ছড়া যানজট। শাহবাগ হয়ে চলাচল করতে না পারায় এলিফেণ্ট রোড, মিরপুর রোড, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত আটকে থাকে হাজারো গাড়ি। একইভাবে গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিলে আটকে পড়ে ফার্মগেট বা মিরপুর রোড হয়ে চলাচলাকারী গাড়িগুলো। পুরান ঢাকাতেও বাধে যানজট।
ট্যাক্সিক্যাব চালক শহীদুল ইসলাম তার গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন প্রেসক্লাবের সামনে। এতটুকু নড়ার সুযোগ তিনি পাননি। বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলে, ‘দেড় ঘণ্টা ধরে এই জায়গায় বসে আছি। বিরক্তি লাগছে।’
টিএসসি থেকে শাহবাগের দিকে আসার চেষ্টায় এক মোটরসাইকেল আরোহী আটকে পড়েন চারুকলা ইনস্টিটিউটের আগে। তিনি বলেন, ‘এক পাশ ছেড়ে দিলেও তো আমরা যেতে পারতাম। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমতো।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী গোলাম মোস্তফার মোটর সাইকেল থাকলেও তিনি সেটি জাতীয় প্রেসক্লাবে রেখে হেঁটে রওয়ানা দেন ইস্কাটনের দিকে। পুরো পথেই তার মতো হাজারো মানুষকে এভাবে হাঁটতে দেখেন তিনি। এতে বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরা পড়ে দুর্ভোগে।
যানজট শুরু হয় সকালেই। রহমান নামে একজন তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করতে সকাল নয়টায় মতিঝিল থেকে ধানমন্ডির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। বেলা ১২টার সময় তিনি গন্তব্যে পৌছেন।
রাজধানীর মৎস ভবনের মোড়ের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের দায়িত্ব পালন করছেন শাহবাগ ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট মোকারম হোসেন। তিনি ঢাকাটাইমসকের বলেন, ‘সকাল থেকেই গাড়ির চাপ একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। তার ওপর আজকে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত জনবল রয়েছে প্রায় প্রতিটি মোড়েই, র্যালি শেষ হলেই যানজট কমতে শুরু করবে।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ছাত্রলীগের সমাবেশের কারণে সকাল নয়টা থেকেই যানজট শুরু হয়। বেলা ১১টার দিকে এটা প্রকট আকার ধারণ করে। তাদের শোভাযাত্রা অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত যায়। এ কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
(ঢাকাটাইমস/৪জানুয়ারী/জিএম/ডব্লিউবি)