‘অক্ষত’ বান্ডিলের টাকাগুলো অঙ্গার

বোরহান উদ্দিন,ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:১৬

‘আমার সব শেষ। এখন আমি রাস্তার ভিখারি। আল্লাহ চাইলে আবার বাঁচব। নইলে কোনো উপায় নেই। এখন ভরসা শুধু আল্লাহ।’ পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে একমাত্র উপার্জনের পথ ছিল পুরনো কাগজের ছোট্ট দোকানটি। কিন্তু সোমবার রাতে গুলশানের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটের ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে সেই দোকানটিও। দোকানের ক্যাশে পলিথিনে মোড়া ৭৬ হাজার টাকার একটি বান্ডিল ছিল। বান্ডিলটি পাওয়া গেছে, কিন্তু টাকা পুড়ে অঙ্গার।

পুড়ে যাওয়া টাকার বান্ডিল হাতে নিয়ে ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে বসে বিলাপ করতে করতে এই কথাগুলো বলছিলেন চল্লিশোর্ধ্ব মনির হোসেন।

বেশ কয়েক বছর ধরে পুরনো কাগজের দোকানটি চালাচ্ছিলেন মনির হোসেন। অন্যদিনের মতো সোমবার রাতেও সবকিছু গুছিয়ে বাসায় যান তিনি। দোকানে রেখে গিয়েছিলেন ৭৬ হাজার টাকার একটি বান্ডিল। পলিথিনে মুড়িয়ে। শেষ রাতে খবর পান ভয়াবহ আগুনের। বুকটা তখন মোচড় দিয়ে ওঠে মনিরের। তিনি ছুটে আসেন ডিএনসিসি মার্কেটে। দূর থেকে দেখছিলেন আকাশ ছেয়ে গেছে ধোঁয়ায়। আরো কাছে গিয়ে দেখেন দাউ দাউ করে জ্বলছে মার্কেট। বাজারের যেই জায়গায় তার দোকানটি ছিল, সে অংশ ধসে গেছে।

মঙ্গলবার দিনভর আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ধ্বংসস্তূপের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি তার। বুধবার সকালে এসে মনির হোসেন নিজের দোকানের জায়গাটি শনাক্ত করেন। পরে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পান পলিথিনে মোড়ানো টাকার বান্ডিলটি। কিন্তু হায়! এ যে এক বান্ডিল টাকার অঙ্গার। তবে এর গায়ে টাকার অঙ্ক, বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম জলছাপের দেখা যায়।

ডিএনসিসি মার্কেটের আগুনে মনিরের মতো কয়েক শ দোকানির জীবিকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে মঙ্গলবার থেকে পাগলপ্রায় এসব দোকানি।

মঙ্গলবার রাত দুইটায় আগুন লাগার পর ভোর সোয়া চারটার দিকে মার্কেটের পেছনের একটি অংশ ধসে পড়ে। কাছাকাছি সময়ে ধসে পড়ে সামনের একটি অংশও। দ্বিতল এই বিপণী বিতানে কাঁচা ও পাকা মার্কেট মিলিয়ে দোকান ছিল ছয় শর মতো। নিচতলায় বড় একটি অংশে ছিল আসবাবপত্রের দোকান। বেশ কিছু খাবারের দোকানও ছিল। দোতলায় ছিল আমদানি করা খাদ‌্যপণ‌্য, প্রসাধনী, পোশাক, প্লাস্টিক পণ‌্য ও গয়নার দোকান।

মার্কেটের নিচতলায় গ‌্যাস সিলিন্ডার মেরামতের কয়েকটি দোকান ছিল। নিচতলায় পূর্ব অংশে কাঁচাবাজার।

ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক একে দুর্ঘটনা দাবি করলেও শুরু থেকেই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগুন লাগাটা ‘পরিকল্পিত’। তারা এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান।

এদিকে বুধবার সকাল থেকে মার্কেটের সামনে জড়ো হন দোকান মালিকরা। অনেককে বেঁচে যাওয়া মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল জানান, আগুন লাগার আগের রাতে মাত্র এক হাজার টাকা নিয়ে বাসায় যান তিনি। পাঁচ লাখ টাকা ক্যাশে রেখে গিয়েছিলেন। আগুনে সব শেষ। হাহাকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

(ঢাকাটাইমস/৪জানুয়ারি/বিইউ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :