বিজিবির ‘হামলা’: ধর্মঘট অচল থমথমে শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি,ঢাকাটইমস
| আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:৫৮ | প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৪৫

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। চলছে না গাড়িও।

শুক্রবার ভোর ছয়টা থেকে এই পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার মানুষ। বিশেষভাবে বিপাকে পড়েছেন কৃষক, কৃষিপণ্য বিপণনকারী এবং পর্যটকরা।

সকালে শহরে নতুন করে কোনা সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও এক ধরনের আতঙ্ক রয়েছে। থমথমে পরিস্থিতিতে মানুষের চলাচলও কমে গেছে। শীত মৌসুমে চা বাগান অধ্যুষিত এই এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকরা আছেন উব্দেগ উৎকণ্ঠায়।

বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীমঙ্গল শহরে এর এক সদস্যের সাথে কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এর জেরে শ্রমিক ও জনতার সংঘর্ষে দুই বিজিবি সদস্যসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। এদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শ্রীমঙ্গল শহরের পানসী রেস্টুরেন্টের সামনে এ সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সন্ধ্যার দিকে শ্রীমঙ্গল ৯ নং সেক্টর সদর দপ্তর থেকে বিজিবি সদস্যরা এসে নির্বিচারে দোকানপাট ভাঙচুর শুরু করে। এসময় ব্যবসায়ীদের উপরও হামলা করে তারা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।

শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ লুৎফুর রহমান বলেন, হামলায় জড়িতদের বিচার, হামলাকারী বিজিবি সদস্যদের শ্রীমঙ্গল থেকে প্রত্যাহার, ক্ষতিপূরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে ব্যবসায়ীরা। ধর্মঘটে পৌর শহরের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল আহমদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংঘাতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন।

সংঘর্ষের পরদিন সকালে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটেনি।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, ‘তারা (ব্যবসায়ীরা) ধর্মঘট পালন করছে। তবে কোনো ধরনের গোলযোগ ঘটেনি। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরাও সতর্ক অবস্থায় আছি।’

দোকান পাট বন্ধের পাশাপাশি যান্ত্রিক যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে এলাকায়। শ্রীমঙ্গল থেকে দূরপাল্লা বা স্বল্পপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছে না পরিবহন শ্রমিকরা। সকালে বাসস্ট্যান্ডে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হয় যাত্রীরা। বিভিন্ন এলাকায় সড়কে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ করছেন। এই অবস্থায় যাদের জরুরি প্রয়োজন রয়েছে তারা রিকশা বা অন্য কোনোভাবে শ্রীমঙ্গলের সীমানা পার হয়ে যানবাহনে চাপছেন। এতে যাত্রার সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনি খরচও বেড়ে গেছে।

মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকায় শীতকালীন সবজি বা ফল চাষিসহ ক্ষুদ্রব্যবসায়ীরা আছেন বিপাকে। ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে তাদের পণ্য পচে যাওয়ার আশঙ্কা করছে তারা।

এই পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন। তারা রেস্টহাউজ বা হোটেলের বাইরে বের না হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। আর যাদের আজকের মধ্যে শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, তাদের ভোগান্তি আরও বেশি। আজ যাদের এখানে আসার কথা তারাও আছেন অনিশ্চয়তায়।

এদিকে এই ঘটনায় বিজিবির কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। বাহিনীটি সংবাদ সম্মেলন করতে পারে-এমন কথা প্রচার হলেও এই প্রতিবেদন লেখ পর্যন্ত এই সংবাদ সম্মেলন হয়নি।

ঢাকাটাইমস/০৬জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :