আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১০:১৬ | প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:৪১

টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের আয়োজনে বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ও ব্যাপক প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ৫২তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শুক্রবার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা ওবায়দুল খোরশেদের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তিনি উর্দূতে আম বয়ান করেন। ১৫ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। এই পর্বে দেশের ১৭টি জেলার মুসল্লিদের পাশাপাশি বিদেশি অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানও অংশ নিচ্ছেন।

প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে তুরাগতীর-সংলগ্ন ইজতেমাস্থলের দিকে আসছেন মুসল্লিরা। গত বুধবার থেকেই তুরাগতীরে জড়ো হতে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে ইজতেমায় অংশ নেওয়ার জন্য বিদেশি মুসল্লিদের কেউ কেউ দু-একদিন আগেই ইজতেমাস্থলে এসে পৌঁছেছেন। তারা দলে দলে ময়দানে এসে খুঁজে নিচ্ছে যার যার খিত্তা। মুসল্লিদের জিকির-আজকারে মুখর তুরাগতীর।

আজ শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৃহত্তর এই জুমার নামাজের ইমামতি করবেন ঢাকার কাকরাইল মসিজদের খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের।

ইজতেমার প্রথম পর্বে দুই হাজার বিদেশি মেহমানসহ ১৭ জেলার অন্তত ২০ লাখ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে আরও ১৫ জেলার মুসল্লি অংশ নেবেন। আগামী বছর বাকি ৩২ জেলার মুসল্লি তুরাগতীরে সমবেত হবেন।

সিটি মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুর রহমান কিরণ জানান, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণ করতে ইজতেমা মাঠে দুই বেলা পানি ছিটানো, ২৪টি ফগার মেশিনের সাহায্যে মশক নিধন ও প্রতি ঘণ্টায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহ, ২৪টি গাড়ির সাহায্যে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ ভেজাল খাদ্য বিরোধী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইজতেমা ময়দানে নানাবিধ উন্নয়ন কার্যক্রম করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশ বিদেশের মুসুল্লিরা যাতে স্বাচ্ছ্যন্দে ইজতেমায় আসতে পারেন এবং অবস্থান করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর এ লক্ষ্যে ইজতেমা ময়দানে বালি ভরাটসহ ৮ হাজার ১শ’ ৬টি টয়লেট নির্মাণ, ওযু, গোসল ও পানি সরবাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ইজতেমার মুরুব্বি গিয়াস উদ্দিন বলেন, এবারের বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বে অংশ নেবেন দেশের ৩৩ জেলার মুসল্লি। এর মধ্যে প্রথম ধাপে অংশ নেবেন ১৭টি জেলার মুসল্লি। এছাড়া বিদেশি মুসল্লিরাও আসবেন। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম ধাপ। এরপর ২০ জানুয়ারি শুক্রবার শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। শেষ হবে ২২ জানুয়ারি।

প্রথম ধাপে যেসব জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন- ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, গাজীপুর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, সাতক্ষীরা ও যশোর।

এদিকে সুষ্ঠুভাবে ইজতেমা সম্পন্নের জন্য নেয়া হয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বৃহত্তর জুমার নামাজ: আজ দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে। কয়েক লক্ষ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে জুমার নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি এ বৃহৎ জুমার নামাজে শরিক হবেন। এরই মধ্যে অনেকে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় আত্মীয়স্বজনের বাসায় অবস্থান নিচ্ছেন।

চার দিন বিরতির পর ২০ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। ২২ জানুয়ারি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০১৭ সালের বিশ্ব ইজতেমা।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, খালেদার বাণী

ইজতেমা উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ সুদৃঢ়করণে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, এ মহান ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখবে। দেশ ও বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার বাণীতে রোহিঙ্গাদের জন্য দোয়া করতে সমবেত মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বলতে গেলে নিয়মিতই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মুসল্লিদের চাপ কমাতে ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমাকে দুই পর্বে বিভক্ত করা হলে ওই বছরই প্রথম দুই দফায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু

ঢাকায় কর দিয়ে ২৬৮০ বিয়ে 

সংরক্ষিত আসনের এমপিদের মধ্যেও সংখ্যায় এগিয়ে ব্যবসায়ীরা: সুজন

মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: ড. কামাল উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :