মির্জাপুরে ছয় ইউপির তফসিল ঘোষণার হদিস নেই

জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ২৩:৪৫ | প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ২৩:১০

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ছয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল চলতি মাসেও ঘোষণা হচ্ছে না। কবে তফসিল ঘোষণা হবে সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না নির্বাচন কমিশন অফিস। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যেও তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা নেই।

নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দায়িত্ব শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে তফসিল ঘোষণার নিয়ম থাকলেও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াও তা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এতে ওই ছয় ইউনিয়নের সম্ভাব্য একাধিক চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলার লতিফপুর, বহুরিয়া, ফতেপুর, তরফপুর, আজগানা ও ভাওড়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা প্রথম সভা হয় ওই বছরেরই ১১ এপ্রিল। তিন মাস আগে তফসিল ঘোষণার নিয়ম অনুয়ায়ী চলতি মাসের ১১ তারিখের আগে ওই ৬ ইউনিয়নে তফসিল ঘোষণার বিধান রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচন অফিস বলেছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে ওই ৬ ইউনিয়নের তফসীল ঘোষণার কোনো সম্ভাবনা নেই।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে গত বছর ২৮ মে পঞ্চম ধাপে ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সময় শেষ না হওয়ায় ওই সময়ে বাদ পড়ে ওই ৬ ইউনিয়ন।

নির্বাচন না হওয়া ইউনিয়নগুলোত চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১১ তারিখ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সেই হিসেবে চলতি মাসের ১১ জানুয়ারির আগে ইউনিয়নগুলোতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্ত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই সকল প্রকার প্রস্তুতি থাকলেও বর্তমান কমিশন এই অল্প সময়ে আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিস।

এদিকে গত বছর ৮ ইউনিয়নে হওয়ার নির্বাচনের সময় থেকেই বাদ পড়া ৬ ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বয়তে শুরু করেছে। ইউনিয়নগুলোর সম্ভাব্য একাধিক চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ ইউনিয়নে রং বে-রঙের ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ড ছাপিয়ে নিজেদের প্রার্থীতা প্রচার করছেন। পাশাপাশি অনেক প্রার্থী এলাকার বিভিন্ন ক্লাব, মসজিদ, মাদরাসা ও মন্দিরে ব্যক্তিগত দান অনুদান দেয়া সহ সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তারা বিগত বছরের ডিসেম্বরে অথবা চলতি বছরের জানুয়ারিতে তফসিল ঘোষণা করা কথা মাথায় রেখে এভাবে মাঠে প্রচার প্রচারণার কাজ করে যাচ্ছিলেন। দেশের একাধিক জাতীয় পত্র পত্রিকায় ওই ৬ ইউনিয়নে ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হতে পারে- এ সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকেও ওই সময়ের তফসিল হতে পারে এবং তাদের নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে বলেও বলা হয়েছে।

কিন্ত চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের অর্ধেক অতিবাহিত হলেও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার কোনো খবর নেই। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে থেকে প্রচার প্রচারণা করায় তাদের ব্যয় যেমন বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি শারীরিকভাবেও অনেকে অসুস্থ হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। এতে প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী উলামা লীগ নেতা কামরুল ইসলাম, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মৃধা শহিদুর রহমান পাষাণ ও বিএনপি নেতা হাজী আব্দুর রউফ, তরফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজিম উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক শওকত মোমেন শাজাহান, তরফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি আজিজ রেজা আজগানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবদল নেতা মো. জাকির হোসেন, ভাওড়া ইউনিয়নের চেয়ামর‌্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আমজাদ হোসেনসহ একাধিক মেম্বার প্রার্থীরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে থেকে তারা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আর্থিকভাবেও ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন।

এছাড়া প্রতিদিনই কোনো না কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে হচ্ছে। এতে তারা শারীরিক ভাবেও অসুস্থ হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। না পারছেন মাঠ ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকতে না পারছেন প্রচারণা চালিয়ে যেতে। লম্বা সময়ের কারণে আর্থিক ও শারীরিক দুইভাবেই তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. শামসুজ্জামান বলেন ৬ ইউনিয়নের নির্বাচন করতে আমারা প্রস্তুত। কিন্ত বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী মাসের ১২ তারিখ। তাই স্বল্প সময়ে এই কমিশন আর কোনো নির্বাচনের আয়োজন না করায় এই মুহূর্তে ওই ৬ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :