কাঁঠালবাড়ী ঘাটের উদ্বোধন বেলা ১১টায়

দূরত্ব ও যানজটের ভোগান্তি কমছে যাত্রীদের

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর)
 | প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০১৭, ০৯:৫২

রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের জন্য মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাওড়াকান্দি ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাট একটি প্রাচীন নৌ ঘাট হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে পদ্মাসেতুর নির্মাণের কর্মযজ্ঞ শুরু হলে মাওয়া ঘাটটি সরিয়ে শিমুলিয়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে আরো আগেই। আর মাদারীপুরের শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটটি ব্যবহৃত হয়ে আসছিল এখন পর্যন্ত।

নৌ পথের দূরত্ব কমাতে বিলুপ্তি ঘটানো হচ্ছে কাওড়াকান্দি ঘাটের। নৌ ঘাটের সকল কার্যক্রম এখন থেকে চলবে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে (শরিয়তপুর ঘাট বলে পরিচিতি)। অর্থাৎ, কাওড়াকান্দি ঘাট স্থানান্তরিত হয়ে কাঁঠালবাড়ীতে নেয়া হচ্ছে।

রবিবার বেলা ১১টার দিকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটের উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ১৯৮৬ সালে চালু হওয়া এই কাওড়াকান্দি ঘাটটি।

এদিকে পদ্মাসেতুর জন্য নির্মিত অ্যাপ্রোচ সড়ক যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহনগুলো সরাসরি কাঁঠালবাড়ী ঘাটে পৌঁছে যেতে পারবে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই। অথচ কাওড়াকান্দি থেকে নৌপথে কাঁঠালবাড়ী পৌঁছাতে একটি লঞ্চ বা ফেরির কমপক্ষে ৩০ মিনিট সময় লাগত।

কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে পদ্মা পার হতে নৌ পথের দূরত্ব কমবে প্রায় ৫ কিলোমিটার। ফলে অনেকটা স্বল্প সময়ের মধ্যেই পার হওয়া যাবে পদ্মা নদী। আর এতে করে নৌ পথের দুর্ভোগ কমবে বলে আশা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘাট এলাকায় যানজট রোধে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে নির্মাণ করা হয়েছে আলাদা আলাদ পার্কিং ইয়ার্ড। দূরপাল্লার বাস, লোকালবাস, মাইক্রোবাসের জন্য করা হয়েছে ভিন্ন পার্কিং ব্যবস্থা। কমপক্ষে সহস্রাধিক পবিরহন এক সাথে পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে এ ঘাটে।

কাওড়াকান্দি ঘাট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ীতে ঘাট স্থানান্তরের জন্য কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রতিদিনই এ ঘাট থেকে নতুন ঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পন্টুনসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। তাছাড়া কাওড়াকান্দি ঘাটের ছোট-বড় দোকান ও খাবার হোটেলও সরিয়ে কাঁঠালবাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চিরচেনা কর্মব্যস্ত কাওড়াকান্দি ঘাটের চিত্র পাল্টে যাচ্ছে নিমিষেই। আর ব্যস্ততা বাড়ছে কাঁঠালবাড়ী এলাকায়।

জানা যায়, সড়ক পথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটটি ১৯৮৬ সালে চালু হয়। কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরি, ৮৬টি লঞ্চ ও আড়াইশ’র বেশি স্পিডবোটে প্রতিদিন ৩০ হাজারের বেশি যাত্রী চলাচল করে। কাওড়াকান্দি এবং শিমুলিয়া নৌপথের দূরত্ব বর্তমানে প্রায় ১৫ কিলোমিটার। কাঁঠালবাড়ী থেকে শিমুলিয়ার দূরত্ব হবে প্রায় ১০ কিলোমিটার।

বিআইডব্লিউটিসির কাওড়াকান্দি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া জানান, ইতোমধ্যেই দুটি ফেরি ঘাট কাঁঠালবাড়ীতে চালু হয়েছে। আর রবিবার বিকালের মধ্যে রোরো ফেরি ঘাটটিও কাঁঠালবাড়ীতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। সবমিলিয়ে রবিবার সন্ধ্যা থেকেই সকল ফেরি ঘাট কাঁঠালবাড়ীতে চালু হচ্ছে। আর ঘাট স্থানান্তরের ফলে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় বাঁচবে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান, কাওড়াকান্দি ঘাট কাঁঠালবাড়ীতে স্থানান্তরের ফলে এ অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে গতি বেড়ে যাবে আরো এক ধাপ। ঘাট এলাকার যানজট নিরসনের জন্য কাঁঠালবাড়ীতে পরিবহনের আসা-যাওয়ার জন্য থাকছে সম্পূর্ণ ভিন্ন সড়ক। ফলে যানজট একদমই হচ্ছে না।

তিনি জানান, সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে, পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে বিপ্লব ঘটছে তা সাধারণ যাত্রীরা স্বচোক্ষে দেখতে পারবে। পদ্মা সেতুর জন্য নির্মিত অ্যাপ্রোচ সড়কের সুফল তারা ভোগ করতে পারবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :