নরসিংদীতে পুলিশ-বাউল সংঘর্ষ, আহত ১০

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:৩১

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

এক বাউল ফকিরের চেহলাম পালন করতে খাওয়া-দাওয়া ও বাউল গানের আয়োজন করেছিলেন ভক্তরা। গানের মঞ্চও প্রস্তুত হয়েছিল। আসর বসে যথারীতি। এসময় হঠাৎই পুলিশের আগমণ।

পুলিশ আকস্মিকভাবেই মঞ্চ ভাঙতে শুরু করে বলে দাবি ভক্তদের। বাধা দিতে এলে শুরু হয় লাঠিপেটা। এতে বেধে যায় সংঘর্ষ। পুলিশের পক্ষ থেকে গুলিও ছোড়া হয় কয়েক রাউন্ড। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত দশজন।

রবিবার বিকাল পৌনে চারটার দিকে নরসিংদীর রায়পুরার নিলার চরের দড়িকান্দি দণিপাড়া হাদীর বাড়িতে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে জালাল উদ্দিন নামে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহতদের মধ্যে একজনের নাম শামসু। বাকিদের নাম জানা যায়নি। এরা গোপন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, নিলার চরের দড়িকান্দী গ্রামের খালেক ফকির নামে এক আধ্যাত্মিক ফকির ৪০ দিন আগে মারা যান। এই খালেক ফকিরের চল্লিশা উপলক্ষে তার ভক্তরা গ্রামে হাদীর বাড়িতে দুই দিনব্যাপী দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও এক বাউল গানের আয়োজন করে। এতে গান পরিবেশনের কথা ছিল প্রথম দিন বাউল শিল্পী সুনিল কর্মকার ও মো. কারী বারেক বৈদেশী। দ্বিতীয় দিন মো. আরিফ দেওয়ান ও মো. রজ্জব দেওয়ানের।

এই বাউল গানের ব্যাপারে থানা পুলিশের সঙ্গে একটি সমঝোতা তথা রফা দফাও হয়ে ছিল বলে দাবি করেছেন ফকির ভক্তরা। এরপর ওই কর্মসূচি উপলক্ষে খালেক ফকির ভক্তরা এলাকায় ব্যাপকভাবে পোস্টারিং করে প্রচারণা চালায় এবং হাদীর বাড়িতে বৈঠক গানের বিশাল মঞ্চ তৈরি করে।

মঞ্চের সামনে বসার জন্য বিশাল ব্যবস্থা করা হয়। ভক্তদেরকে আপ্যায়নের জন্য গরু জবাই করে খিচুরি পাকানোর ব্যবস্থাও করা হয়। এই উপলক্ষে আশেপাশের বহুসংখ্যক হকার সকাল থেকেই গ্রামে গিয়ে দোকান পেতে বসে।

রবিবার বিকেল পৌনে চারটায় একদল দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভক্তদেরকে মারধোরসহ এসব মঞ্চ, দোকানপাট,  টেবিল চেয়ার ভাঙচুর করতে থাকে। এসময় ফকির ভক্তরা পুলিশকে বাধা দিলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়।

এক পর্যায়ে পুলিশ জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে অন্তত ১০ জন আহত হন। এই ঘটনার সময় বাউল ভক্তরা তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করে রাখে। পরে নরসিংদী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় আটক পুলিশদেরকে উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে থানা পুলিশের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও ওসিকে পাওয়া যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ইএস)