যেভাবে ঘোষণা হলো ফাঁসির রায়

মোসাদ্দেক বশির ও তানিম আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ থেকে
| আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:২৮ | প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৪
ফাইল ছবি

সাত জনকে অপহরণ, ঘটনার তদন্ত আর বিচারের দীর্ঘ সময়ে অনেক কিছুই ঘটেছে। কখনও কখনও দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগও করেছে বাদীপক্ষ। কিন্তু দণ্ড ঘোষণায় সময় লাগলো না এতটুকু।

সোমবার নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এনায়েত হোসেন এজলাসে উঠলেন। আসামিদের কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে তা বললেন আর একসঙ্গেই সবার রায় ঘোষণা করলেন। আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের কেউ বলছেন, পুরো কার্যক্রমে সময় লেগেছে ১০ মিনিট, কেউ বলছেন ১৫ মিনিট।

সাত খুন মামলার রায় ঘোষণা হবে-নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে এ এক প্রতীক্ষিত ক্ষণ। সকাল থেকেই আদালত চত্বরের দিকে আসতে থাকে উৎসাহী মানুষ। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে আদালত চত্বরে ঢুকতে পারেননি কেউই। এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য সকাল থেকেই আদালত চত্বরে অন্য কোনো মামলার বিচার প্রার্থী বা উৎসুক জনতাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ঢুকতে পেরেছেন কেবল আইনজীবী আর সাংবাদিকরা, তাও কড়া তল্লাশির পর। আর ছিলেন বাদীপক্ষ আর খুন হওয়া সাত জনের স্বজন।

আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের আনা হয় নয়টা ৪০ মিনিটের দিকে। এজলাসে তাদেরকে তুলতে তুলতে বেজে গেলো নয়টা ৫০। এরপর অপেক্ষা।

সকাল ১০টায় বসবেন বিচারক। তিনি কী রায় ঘোষণা করবেন-তা জানতে এই ১০ মিনিট সময়ই হয়ে যায় অনেক দীর্ঘ। ঠিক ১০টায় বিচারক এনায়েত বসলেন এজলাসে। এসেই তিনি আসামিদের হাজিরা নিলেন। ২৬ জনের নাম ঘোষণা করতে করতে যত সময় লাগলো, রায় ঘোষণা হতে লাগলো না তত।

রায় ঘোষণার সময় সামনের সারিতে ছিলেন আইনজীবী ইসরাফিল হোসাইন। তিনি আদালতের পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সকাল ১০টার সময় মাননীয় আদালত এজলাসে উঠেন। তখন আদালত ভরপুর ছিল। অনেক আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, আসামি আর সাংবাদিকরা সেখানে ছিলেন।’

এই আইনজীবী বলেন, ‘মাননীয় আদালত শর্ট করে রায়টি পরে শুনিয়েছেন। প্রত্যেক আসামি কোন কোন অপরাধে অপরাধী তা শুনিয়েছেন। এরপর তিনি একসঙ্গে রায় ঘোষণা করেন।’

বিচারক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছিল। এই মামলা দুটির আসামি এবং পিও একই হওয়ায় একটি মামলা হিসেবে গণ্য করে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং নয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হলো।’

আইনজীবী ইসরাফিল হোসাইন বলেন, পুরো রায়টা একশ পৃষ্ঠারও বেশি। সেখানে কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে তার বিস্তারিত লেখা আছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেনও ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আদালত সংক্ষেপে রায় দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রস্তুত আছে। সেটি পরে প্রকাশ করা হবে। আজ শুধু সংক্ষিপ্তটুকুই পড়েছেন বিচারক।’

রায় ঘোষণার পর আদালতে এক ধরনের স্বস্তির বাতাবরণ তৈরি হয়। কারণ, একজন বাদে আসামিরা সবাই র‌্যাবের সদস্য হওয়ায় রায় কী হবে এ নিয়ে শঙ্কার কথা বলে আসছিল বাদীপক্ষ আর আইনজীবীরা। তবে আইনের শাসনের প্রতি আস্থার কথাও জানিয়েছিলেন কেউ কেউ।

এই রায় শুনে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও হত্যা মামলার বাদী বিউটি ইসলাম, নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান, আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমের স্ত্রী হনুফা বেগম-সবাই বলেছেন, রায় তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য। উচ্চ আদালত এই রায় বহাল রাখবে বলেও তাদের প্রত্যাশা। আর সেটা যেন দ্রুততর হয়, সে কামনা করেছেন তারা।

ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :