নূর-তারেকের চেহারায় হতাশা, ডুকরে কাঁদলেন অন্যরা

মোসাদ্দেক বশির ও তানিম আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ থেকে
| আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:১৪ | প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:১২

দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের নৃশংসতম ঘটনার একটি। সাত জনকে একসঙ্গে হত্যা, এরপর পেট কেটে মরদেহ ডুবিয়ে দিতে মানসিক শক্তি কতটা লাগে? এদেরই অনেকে রায় শোনার পর কাঁদলেন ডুকরে। আর প্রধান আসামি নুর হোসেন ও তিন র‌্যাব কর্মকর্তার চেহারায় হতাশা ছিল স্পষ্ট।

সোমবার সকাল ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রায় ঘোষণা হয়। প্রধান আসামি নুর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক র‌্যাব কমান্ডার এম এম রানা ও আরিফ হোসেনসহ ২৬ আসামির ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয় এই রায়ে।

আসামিদের মধ্যে কেউ কেউ ডুকরে কেঁদে উঠেন। তবে কারা কেঁদেছেন সেটা দূর থেকে দেখা যায়নি। নুর হোসেনের হেলমেট পড়া ছিল। সবার হাতে ক্যান্ডকাপ, পায়ে দণ্ডবেড়ী পড়ানো ছিল।

রায় ঘোষণার সময় আসামিদের কাছাকাছি ছিলেন আইনজীবী ইসরাফিল হোসাইন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর দেখলাম কেঁদেছেন সাত থেকে আট জন।’

যারা কেঁদেছেন তাদের মধ্যে কি নুর হোসেন বা তিন শীর্ষ র‌্যাব কর্মকর্তা আছেন?-জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ‘না, তারা কেউ কাঁদেননি। তবে তাদের চেহারা দেখে হতাশ মনে হয়েছিল। এটাই তো স্বাভাবিক যে রায় হয়েছে তা তো আর তাদের জন্য আনন্দের হয়নি।’

নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান জানান, তার জামাতাসহ সাত জনকে তুলে নেয়ার পর র‌্যাব অফিসে গিয়ে কেঁদেছিলেন তারা। কিন্তু র‌্যাব তাদের কান্নার দাম দেয়নি। বলেন, ‘এর লাইগ্যাই আইজ কানতে হইলো তাদের।’

সেই দিনের ঘটনা বর্ণনা করে নজরুলের শ্বশুর বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই জানতাম র‌্যাব ধরে নিয়ে গেছে। আমরা র‌্যাবের অফিসে গিয়ে তাদের সাঈদের পা ধরে কান্নাকাটি করেছি। তাদের সাঈদ আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে।’

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সদর উপজেলার ফতুল্লা থেকে সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন।

পরদিন ২৮ এপ্রিল নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি এবং ৭ মে চন্দন সরকারের মেয়ের জামাতা বিজয় কুমার সরকার বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন।

৩০ এপ্রিল বিকালে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জন এবং ১ মে সকালে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সবারই হাত-পা বাঁধা ছিল। পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন। প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দুটি করে বস্তা বেঁধে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল।

এ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ৩৫ জনকে আসামি করে পুলিশ। ২০১৬ সালের ৮ মে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামিদের মধ্যে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন র‌্যাব সদস্য। পলাতক ১২ জনের মধ্যেও আটজন র‌্যাব সদস্য।

মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ভারতের কলকাতায় আটকের পর ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর দেশে ফেরেন। পরদিন তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে তোলা হয়।

অভিযোগ গঠন হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ৩৮ কর্মদিবসে শুনানি শেষ করেন।

ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :