ঢাকায় পোশাক পণ্যের তিনটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শুরু

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:০১ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তৈরি পোশাক শিল্পের সর্বাধুনিক বৈশ্বিক প্রযুক্তি তুলে ধরতে বুধবার থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রর্দশনী। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীগুলোর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। দেশের উন্নয়নের আমরা কৃষিপণ্যে ২০ শতাংশ, ফার্নিচারে ১৫ শতাংশ, প্লাস্টিকে ১০ শতাংশ ক্যাশ ইনসেনটিভ দিচ্ছি। আজকের প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গ্যাপেক্সপো কর্তৃপক্ষ তৈরি পোশাক খাতে নগদ প্রণদনার জন্য যে আবেদন জানিয়েছে তা আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব রাখব।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ২৫টি পণ্য বিশ্বের ৬৮টি দেশে রপ্তানি করে যে বাংলাদেশ আয় করতো মাত্র ৩৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বর্তমানে ১৯৬টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করে আয় হচ্ছে ৩৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে রপ্তানি লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্যাকেজিং শিল্পে ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানির লক্ষমাত্রা ১৮ বিলিয়ন ডলার পৌঁছাতে সার্বিক সাহায্য করবে বর্তমান সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প একটি ইতিহাস তৈরি করেছে। আশির দশকে যখন আমরা পোশাক শিল্পে আসি তখন আমাদের পোশাক শিল্পের এক্সেসরিজ সব কিছুই বাহির থেকে আমদানি করতে হতো, আমরা কার্টন কিনতাম হংকং থেকে, একটা কার্টনের জন্য তিন মাসে আগে থেকে চিন্তা করতে হতো কিন্তু এখন এই খাত অনেক স্বয়ংসম্পূর্ণ, আগের রাতে অর্ডার করলে পরের দিনই আমাদের হাতে এক্সেসরিস চলে আসে।

আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প দেশের কর্মসংস্থানের এক বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে ৪৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী।

‘গার্মেন্টেক বাংলাদেশ ২০১৭’ ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক র্সোসিং ফেয়ার’ এবং গ্যাপেক্সপো’ শীর্ষক তিনটি প্রদর্শনীতে ২৪টি দেশের ৪০০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।

সম্মিলিতভাবে প্রদর্শনীগুলোর আয়োজন করেছে জাকারিয়া ট্রেড আ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিস অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিজিএপিএমইএ সভাপতি আব্দুল কাদের খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এস কে সুর চৌধুরী, বিজিএপিএমইএর পরিচালক কে এইচ লতিফুর রহমান আজিম, এফবিসিসিআইর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আয়োজক প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ট্রেড আ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল এর প্রধান নির্বাহী টিপু সুলতান ভূঁইয়া এবং এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেডের নন্দ গোপাল কে।

আইসিসিবির আটটি হলে শুরু হওয়া পোশাক শিল্পের মেশিনারি এবং এর সহায়ক পণ্যের ১৬তম এ আর্ন্তজাতিক প্রদর্শনী চলবে আগামী ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এবারের প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলঙ্কা, ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা, স্পেন, ফ্রান্স এবং হংকংয়ের মোট ৪০০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। আইসিসিবির আটটি হলে চলমান ট্রেডশোগুলোতে  ৬০০টি স্টলসহ ৮০০টি বুথ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রডাক্টিভিটি, সেইফটি, কমপ্লায়েন্স, ইফিসিয়েন্সি, ভ্যালু এডিশন, প্রডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন, ফ্যাব্রিক সোর্সিং এবং প্যাকেজিং সংশ্লিষ্ট টেকনোলজি সল্যুশন্স উপস্থাপন করছে।

প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিস, মোড়কীকরণ এবং লেবেল, জিপার, ট্যাগ, ট্যাপ, থ্রেড, রিবন, বাটন, রিভেট, লেইস, হুক, ট্রান্সফার ফিল্ম, পেপার, ইন্ক ইত্যাদিসহ সংশ্লিষ্ট মেশিনারি তুলে ধরা হয়েছে।

সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে।

বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে www.asktradex.com অথবা  www.garmentechdhaka.com ওয়েবসাইটে।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এএকে/জেআর/জেবি)