গাইবান্ধায় ‘উধাও’ দুই নেতা ফিরলেন, এখনও নিখোঁজ দুই

উত্তম সরকার, গাইবান্ধা প্রতনিধিি
| আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৩৭ | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:০৯

নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের দুই সহযোগী সংগঠনের নেতার খোঁজ মিলেছে। তাদেরকে পাওয়া গেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে। বুধবার গভীর রাতে একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের সৈয়দপুর শহরে রেখে কয়েকজন চলে যায়। পরে সেখান থেকে তারা বাড়িতে আসে। তবে এখনও স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের এক নেতা নিখোঁজ রয়েছে।

নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়িতে ফেরা ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা হলেন সাদুল্যাপুর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মনোয়ারুল হাসান জীম ম-ল এবং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক।

গত ৯ জানুয়ারি রাত ১১টায় জীম ও সাদেক মটর সাইকেলে করে সাদুল্যাপুর থেকে লালবাজার হয়ে নলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়নের কাছে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন।

এই ১০ দিনে তারা কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে জীম ম-ল কিছু বলতে রাজি হননি। জীম কেবল বলেন, একটি মাইক্রোবাসে তাদেরকে তুলে নেয়া হয়। এরপর একটি জায়গায় ছোট একটি ঘরে আটকে রাখে তারা। কেন এবং কী কারণে তাদেরকে তুলে নেয়া হয়েছে, সেটাও জানতে পারেননি বলে জানান জীম।

ছাত্রলীগ নেতা সাদেক বলেন, তাদেরকে যারা আটক করেছিল, এই ১০ দিনে তারা কোনা দাবি জানায়নি বা তাদেরকে কিছু করতে বলেনি। বিশেষ কিছু জানতেও চায়নি। আর কারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল সে বিষয়েও কোনো তথ্য নেই এই ছাত্রলীগ নেতার কাছে। বলেন, তিনি কাউকে এর আগে কখনও দেখেননি।

এই দুই নেতার নিখোঁজ হওয়া এবং ফিরে আসার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইছে না পুলিশও। জানতে চাইলে সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরহাদ ইমরুল কায়েস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা জানতে পারি রাতি তিনটার দিকে তারা বাড়িতে ফিরেছে। কিন্তু তাদেরকে কে নিয়ে গিয়েছিল, কারাই বা ফিরিয়ে দিয়েছে এ বিষয়ে তারা আমাদের কাছে মুখ খুলেনি। তারা কোনো ধরনের কথা বলছে না, তাহলে আমরা কী ব্যবস্থা নেবো?’ জানতে চাইলে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।’

এখনও নিখোঁজ দুই জন

এই দুই নেতা নিখোঁজের পর দিন নিখোঁজ হন নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার স¤পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ স¤পাদক শফিউল ইসলাম শাপলাও। নলডাঙ্গার রেলগেট কাচারী বাজার এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাদেরকে তুলে নেয়া হয়। তবে র‌্যাব বা পুলিশ-কোনো সংস্থাই এদেরকে আটক করার কথা স্বীকার করেনি।

এই চার নেতা নিখোঁজের সঙ্গে সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাদুল্যাপুর এই এলাকার পাশেই অবস্থিত।

গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জে নিজ বাড়িতে গুলে করে হত্যা করা হয় লিটনকে। আওয়ামী লীগ এবং নিহতের পরিবার এই ঘটনায় জামায়াতকে দায়ী করলেও নিজ দলের ভেতর কোন্দল বা অন্য রাজনৈতিক কারণকেও বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।

এই ঘটনায় সুন্দরগঞ্জে আটক করা হয়েছে ৫০ জনেরও বেশি। এদের বেশিরভাগই জামায়াত-শিবিরের কর্মী। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

এই তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে মুখ খুলছে না পুলিশ। জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আড়াউর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। এ নিয়ে কথা বলবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।’

ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :