‘জনগণের হাঁটার পথ মুক্ত হবেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:২৫ | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৫৯

ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানে বাধা দেয়ার চেষ্টা চলছে জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, এই অভিযান কোনোভাবেই বন্ধ হবে না। জনগণের হাঁটার পথ মুক্ত করা হবেই।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক আলোচনায় মেয়র খোকন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে ফুটপাত ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এই সব ফুটপাত থেকে যারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের কাজে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ লক্ষে আমাদের এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যহত থাকবে।’

গত রবিবার থেকে গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকায় ফুটপাতে হকার বসার ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। কর্মদিবস শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার আগে কাউকে বসতে দেয়া হচ্ছে না। কেউ বসলেই অভিযা চালিয়ে ভেঙে দেয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সংগঠন এই অভিযানের সমালোচনা করছে। তাদের দাবি, সিটি করপোরেশনের এই সিদ্ধান্তে পথে বসবে হাজার হাজার হকার।

এই আলোচনাটি হয় মূলত অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নি দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার এবং বাস্তবায়ন করার বিষয়ে। সাঈদ খোকন ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক এতে অংশ নেন।

আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা ভুমিকম্পের পূর্ব প্রস্তুতির বিষয়ক ও অগ্নিরোধে তাদের প্রস্তাব ও পরিকল্পনা ঢাকার দুই মেয়রের কাছে উপস্থাপন করেন।

মেয়র সাঈদ খোকন জানান, পুরান ঢাকার সব রাসায়নিক গুদাম আগামী ১ মার্চ থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিসকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

মেয়র বলেন, গুলশান মার্কেটে আগুন নিয়ে এক ধরনের উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। এই দুর্ঘটনা তো বটেই যে কোনো বড় আগুনের পরই কথা উঠে, এটা দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়, কিন্তু মানুষ আর জানতে পারে না। তদন্ত রিপোর্ট কখনও প্রকাশ হয় না। মেয়র বলেন, আগুন যদি নাশকতাই হয়ে থাকে, তবে বিচার হয় না কেন।

মেয়র বলেন, ‘এ বিষয়ে আজ আমাদের সজাগ হওয়ার সময় এসেছে। যদি কোন অগ্নিকাণ্ড নাশকতার কারণে ঘটে থাকে, তাহলে সেই ঘটনাকে আইনের আওতায় এনে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদ্যোগ ও ব্যবস্থা আমাদের সবাইকেই নেয়া উচিত।’ আগুনের ঘটনায় করা তদন্তের প্রতিবেদন জন সম্মুখে প্রকাশ করার পরামর্শও দেন মেয়র।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পেতে বিশেষ ধরনের সেন্সর স্থাপনে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও তিতাস গ্যাসের প্রতিও আহ্বান জানান মেয়র। জানান, এসব সেন্সরের দাম খুব বেশি না। কিন্তু এর উপযোগিতা অনেক বেশি। কারণ কোথাও ভূমিকম্প হলে আগেই ডিপিডিসি ও তিতাসের মূল সার্ভারে তথ্য চলে যাবে। এতে করে মূল সংযোগ থেকেই গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা যাবে।

ফায়ার সার্ভিস সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকার কথা ছিল জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়ায় অসন্তোষ জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে রয়েছে তারা। কিন্তু সিটি করপোরেশনের ২০০৯ সালের আইন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকার কথা।’

মেয়র বলেন, ‘আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা হল ব্যবস্থাপনার সমস্যা। যা বহু সমস্যা সৃষ্টি ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বাধার সৃষ্টি করে। আমরা যে কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাই, যারা সুবিধাভোগী রয়েছে তার বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করার চেষ্টা করে।’

ফায়ার সার্ভিসের অপ্রতুল লোকবল নিয়ে নাখোশ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, ঢাকা শহবে দেড় কোটি মানুষের জন্য যেখানে নূন্যতম জনবল ১০ হাজার থাকার কথা সেখানে আছে মাত্র ৫০০ জন। অন্যদিকে ৫০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দরকার থাকলেও আছে মাত্র ১৩টি। যেহেতু আমাদের ফায়ার সার্ভিসে তেমন শক্তিনেই সেহেতু ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বুয়েট, ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাসসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/এএকে/)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :