বন বিভাগের কাঠে জ্বলছে শতাধিক ইট ভাটা

মো. আব্বাস উদ্দিন, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)
 | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:০৫

শেরপুর জেলায় বন বিভাগের ৩টি রেঞ্জ রয়েছে। এই ৩টি রেঞ্জের অধীনে আছে ১০টি বিট অফিস। রাংটিয়া রেঞ্জের অধীনে ৩টি বিট যথাক্রমে রাংটিয়া বিট, গজনী বিট ও তাওয়াকোচা বিট। মধুটিলা রেঞ্জের অধীনে সমশ্চুড়া বিট, সন্ধ্যাকুড়া ও বাতকুচি বিট অফিস রয়েছে। বালিঝুড়ি রেঞ্জের চারটি বিট রয়েছে। সেগুলো হলো- বালিঝুড়ি বিট, মালাকুচা বিট, ডুমুরতলা বিট ও কর্ণঝোড়া বিট রয়েছে।

১০টি বিটের বনাঞ্চলের বনভূমির আওতার মধ্যে নানা প্রজাতির বৃক্ষ ছিল। দীর্ঘদিন থেকে এই বনভূমির বিটগুলো থেকে কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বৃক্ষ নিধন চলছে। প্রতিদিন এই ৩টি রেঞ্জের বিটগুলো থেকে গাছ কেটে ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে হাজার হাজার মণ লাকড়ি পাচার হচ্ছে। পাহাড়ের এই জ্বালানি কাঠ দিয়ে শেরপুর-জামালপুরের শতাধিক ইট ভাটা চলছে।

জানা যায়, এই সব অবৈধ কাঠ পাচারের জন্য সিন্ডিকেটরা কৌশলে বিভিন্ন ভুয়া কাগজ-পত্র তৈরি করে পথ উন্মুক্ত করেছে। এই সব জ্বালানি কাঠ পাচারকারীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, আমরা গ্রাম থেকে এসব কাঠ ক্রয় করি, কিংবা লড বিডারদের কাছ থেকে ক্রয় করি। এছাড়া চেয়ারম্যানের অনুমতিপত্রের মাধ্যমে কাঠ সংগ্রহ করে বিক্রি করি।

লড বিডার অথবা চেয়ারম্যানদের কাছে বিষয়গুলো জানতে চাইলে চেয়ারম্যান জানান, সামান্য কিছু লোক আসলে তাদের নিজস্ব বাগান থাকলে যাচাই-বাছাই করে ২/১টার অনুমতি দিয়ে থাকি।

লড বিডাররা জানায়, আমরা যখন লড ক্রয় করে শুধুমাত্র কাটার সময় কাঠ রেখে জ্বালানি কাঠগুলো লাকড়ি করে বাইরে বিক্রি করে থাকি। কিন্তু প্রশ্ন হলো প্রতিনিয়ত তাহলে এই জ্বালানি কাঠ আসে কোথা থেকে? যেভাবে প্রতিনিয়ত জ্বালানি কাঠ পাচার হচ্ছে অতি অল্প সময়ে বনাঞ্চলগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, সরকার এই বন উজারের কবল থেকে রক্ষার জন্য সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই সামাজিক বনায়নের ফলে বন বিভাগের জমি দখলদারদের দখলে যাবে না। এ কারণেই সরকার অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সামাজিক বনায়নের প্রকল্প হাতে নেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সামাজিক বনায়নের অংশীদার হিসেবে ওই এলাকার স্থায়ী দরিদ্র, ভূমিহীন বাসিন্দারা ওই সামাজিক বনায়নের অংশীদার হওয়ার কথা। কিন্তু সরকারের এই নিয়ম নীতিমালার তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধর্ণাঢ্য প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব দলীয় পর্যায়ের লোকজন এ সামাজিক বনায়নের অংশীদার করা হয়। যেসব লোকজন অংশীদার করে সামাজিক বনায়ন সৃজন করা হয়েছে তাদের পক্ষে এসব বন রক্ষা ও খোঁজ খবর রাখা সম্ভব না। ফলে বনাঞ্চলগুলোর বৃক্ষ নিধন বন্ধ হচ্ছে না।

(ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :