মেঘনায় ডুবোচর, জোয়ার-ভাটায় চলাচল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:৪৫

লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী ঘাটের প্রবেশমুখে এবং ভোলা জেলার ইলিশা ঘাটের প্রবেশমুখে পলি জমে ডুবোচরের সৃষ্টি হওয়ায় নদীতে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন লঞ্চ-ফেরি চলাচলের জন্য নির্ভর করতে হয় জোয়ার-ভাটার ওপর। ফলে এই নৌরুটে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা পড়েছে দুর্ভোগে।

জোয়ার-ভাটার হিসাব করে চলাচল করতে হয় বলে ঘণ্টার পর ঘণ্টাা মজু চৌধুীর হাট লঞ্চঘাটের এক কিলোমিটার দূরে রহমতখালী চ্যানেলে থাকতে হয় ফেরি ও লঞ্চসহ যাত্রীদের। এ রুটে দ্রুত ড্রেজিং করা না হলে হুমকির মুখে পড়বে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। যেকোনো সময় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন বিপাকে পড়বে কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী শ্রমিক, কৃষক, পরিবহন মালিক এবং যাত্রীসহ লাখ লাখ মানুষ।

সরেজমিনে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুট হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যাতায়াতের জন্য ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে কামেনী, কিষানি ও কস্তুরী নামের তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজু চৌধুরী হাট লঞ্চঘাটটি চালু করে সরকার। বর্তমানে এই লঞ্চঘাটের এক কিলোমিটার দূরে রহমতখালী চ্যানেল হয়ে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুট দিয়ে চলাচল করছে কনকচাঁপা ও কিষাণী নামে দুটি ফেরি ও পাঁচ-ছয়টি যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সি ট্রাক। নদীর মাঝপথে নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে ফেরি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে। আর তাতে পরিবহনের ট্রিপ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে।

চট্টগ্রাম থেকে ভোলার উদ্দেশে ট্রাক ভর্তি কাঁচামাল নিয়ে যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক সাইফুল ইসলাম স্বপন। তিনি জানান, সঠিক সময়ে গন্তব্যে ফেরি না পৌঁছায় বিপদে পড়েছেন তিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় ট্রাকের কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ফেরি কনকচাঁপার মাস্টার আব্দুস সালাম জানান, মজু চৌধুরীর ঘাটের লক্ষ্মীপুর রহমত আলী চ্যানেলে এবং ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের সামনে পৌনে এক কিলোমিটার এলাকায় ডুবোচর জেগে ওঠায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না ফেরি। এতে প্রতিদিন দুই থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী যানবাহন ফেরি অপেক্ষায় ঘাটে আটকা থাকে। আর যাত্রী নিয়ে ফেরী ও লঞ্চ আটকে থাকে ডুবোচরে। তখন জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। জোয়ার এলে নদীতে কিছুটা পানি বাড়ে। এরপর ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।

ফেরি কিষানির মাস্টার আব্দুল বারেক জানান, নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে এই রুটে ফেরিসহ যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে বিঘœ ঘটছে প্রতিদিন। ডুবোচরের কারণে ফেরি মেঘনা নদীর মাঝপথে আটকে গেলে পণ্যবাহী গাড়ি ও যাত্রীসহ অপেক্ষায় থাকতে হয় কখন জোয়ার আসবে। এতে করে লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুটে যাতায়াতের সময় বেড়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) কয়েককবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

মজু চৌধুরীর ঘাটের ইজারাদার মো. আলমগীর হোসেন জানান, মজু চৌধুরীর ঘাটের প্রবেশমুখের জমা পলি দ্রুত ড্রেজিং করে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক না করলে এখানকার হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন।

লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বরত বিআইডাব্লিউটিসির সহকারী পরিচালক শিহাব হোসেন জানান, লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাটের রহমত আলী চ্যানেলে এবং ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের সামনে পৌনে ১ কিলোমিটার এলাকায় ডুবোচর জেগে ওঠায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না ফেরি। জোয়ার-ভাটার হিসাব করে ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে এই রুটে ফেরিসহ যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :