শাহজালালে ১৪ হাজার ৯০০ পিস নকল মোবাইল সেট জব্দ
হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৪ হাজার ৯০০ পিস জি ফোন ব্রান্ডের নকল মোবাইল সেট জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এগুলো আইএমআই নম্বর দিয়ে খালাসের চেষ্টার সময় আটক করা হয়। জব্দ করা এই ফোনগুলোর আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার বিকালে কাকরাইল আইডিইবি ভবনের দশম তলায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টমস হাউজ বি/ই নম্বর-৪১৯৭৯ এর মাধ্যমে আমদানিকৃত জি ফোন ব্রান্ডের মোবাইল ফোনের একটি চালান গত ১৮ জানুয়ারি বুধবার খালাসের পরবর্তী সময়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর আটক করে। চালানটিতে ১৪ হাজার ৯০০ পিস মোবাইল ফোন সেট ছিল যা ডেলিভারি গেটের বাইরে ২৯৮টি কার্টুন থেকে আটক করা হয়।
ড. মঈনুল খান বলেন, প্রাথমিক তদন্তের মোবাইল ফোনগুলো নকল আইএমইআই নম্বর সম্মলিত বলে প্রমাণিত হয়। নমুনা হিসেবে কয়েকটি মোবাইল সেটের আইএমইআই নম্বর ইন্টারনেটে চেক করা হয়। ইন্টারনেটে উক্ত আইএমইআই নম্বরসমূহ অ্যাসুস ব্রান্ডের বাংলাদেশের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে আইএমইআই নম্বরসমূহ সরবরাহ করা হলে অ্যাসুসের জেড ফোন ব্রান্ডের মোবাইল বলে নিশ্চিত করেন।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, চালানটির আমদানির দলিলাদির সাথে বিআরটিসির একটি সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। যা পরে বিআরটিসির স্পেকট্রাম ডিভিশনের সাথে যোগাযোগ করে আইএমইআই নম্বরগুলো সরবরাহ করা হলে তারা যাচাই করে সেগুলোকে অ্যাসুস জেড ফোন ব্রান্ডের বলে জানান। তবে বিআরটিসির সার্টিফিকেটটি ইস্যু করেছেন বলে জানিয়েছেন। পরে বিআরটিসির প্রতিনিধি দল দপ্তরে আসেন এবং মোবাইল ফোনের উল্লিখিত আইএমইআই নম্বর তাদের দপ্তর থেকে ইস্যু করা হয়নি বলে জানান।
ড. মঈনুল খান বলেন, জব্দকৃত মোবাইল ফোনের চালানটি হংকং থেকে আমদানিকৃত । ঢাকার আলী এন্টারপ্রাইজ নামের এবং সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট সাউথ ইস্ট এশিয়া। চালানটির আনুমানিক বাজার মূল্য এক কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতিপিস এক হাজার দুইশ টাকা দরে। আমদানিকারক শুল্ককর পরিশোথ করা হয়েছে ১৮ লাখ ১০ হাজার ৭৫২ টাকা সমগ্র শুল্ক ২২.৭৫ শতাংশ।
ড. মঈনুল খান আরও বলেন, আইএমইআই নম্বর প্রতিটি মোবাইল সেটের ইউনিক নম্বর। একটি সেটের জন্য একটি আইএমইআই নম্বর নির্দিষ্ট থাকে। এটি ১৫ অক্ষরের হয়ে থাকে। ১৫ অক্ষরের মধ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কোড, মডেল, সিরিয়াল সম্বলিত তথ্য থাকে, যার ফলে বিশে^র সকল হ্যান্ডসেটর জন্যই এই নম্বর ভিন্ন হয়ে থাকে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে একটি চক্র মোবাইল ফোনের এ ইউনিক নম্বর পরিবর্তন করে নানা ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছে। এমনকি একটি আইএমইআই নম্বর সাড়ে ১২ হাজার সেট ব্যবহার করারও তথ্য পাওয়া গেছে। এই ধরনের নকল আইএমইআই নম্বর যুক্ত মোবাইল ফোন সাধারণত মোবাইল সন্ত্রাসে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যাতে আইএমইআই নম্বর ট্রাকিং করে অপরাধীদের শনাক্ত করা না যায়। প্রকৃত আইএমইআই নম্বর যুক্ত না থাকায় ধারণা করা যায় মোবাইলগুলো অতি নিন্মমানের ও নকল। এতে ক্রেতা সাধারণের যেমন প্রতারিত হওয়ার সুযোগ ছিল তেমনটি বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তিন বছরে ব্যাপকসংখক মোবাইল আটক করা হয়েছে এয়ারফ্রেড থেকে। এছাড়াও বিভিন্ন বিপনী বিতানে অভিযান চালিয়ে নকল মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসান।
(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এএ/জেবি)