বিরোধী দলের গঠনমূলক ভূমিকা চান রাষ্ট্রপতি

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:২৫ | প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০১৭, ২০:১৬

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জনগণের প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলসহ সবাইকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। জাতীয় সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষঅ বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের ১৪তম ও ২০১৭ সালের প্রথম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর ১১৪ পৃষ্ঠার ভাষণে বর্তমান সরকারের কার্যক্রম ও অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, পররাষ্ট্রনীতি, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নারী ও শিশু খাতে উন্নয়ন, ক্রীড়া, যুব উন্নয়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, অভিবাসীদের উন্নয়ন, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং জন প্রশাসন খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

ভাষণের শুরুতে তিনি সব সংসদ সদস্য ও দেশবাসীর প্রতি ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

এছাড়া তিনি সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহীদকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। যাঁদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি সার্বভৌম দেশ ও স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান ও লাল-সবুজ পতাকা অর্জিত হয়েছে।

তিনি চার জাতীয় নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। যাঁরা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতি ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে আত্মত্যাগকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের তিন মহান পুরুষ- শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। যাঁরা জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সংঘটিত বর্বর হত্যাযজ্ঞ ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেদিন শাহাদাতবরণ করেছিলেন তাঁর মহিয়সী সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও পারভীন জামাল রোজী, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি এবং সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দিন আহমেদ। তিনি তাঁদের সবাইকে অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করেন এবং তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এছাড়াও ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি গ্রেনেড হামলায় শহীদ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ বিভিন্ন সময় গ্রেনেড হামলা ও আন্দোলনে আত্মত্যাগকারীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরু দায়িত্ব অর্পিত হয়। গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের, জ্ঞানভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নিম্নমধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার মানসে এখন জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে ২০৪১ সালের দিকে। তিনি দৃঢ়ভাবে আস্থা প্রকাশ করেন সরকার উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসাবে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবে। ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ ও এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বিভিন্ন পরিকল্পনায় গৃহীত কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির এ প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণ হবে।

রাষ্ট্রপতি দৃঢ়ভাবে আশা পোষণ করেন যে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতি এসব লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।

তিনি সন্ত্রাস নির্মূলে সরকারের দৃঢ়প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের সময়োপযোগী ও কার্যকর আর্থিক এবং মুদ্রানীতি গ্রহণের ফলে দেশ ধারাবাহিকভাবে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ব-অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চলমান সংকট সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে দেশে গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাত দশমিক এক-এক শতাংশ। গত ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চৌদ্দ দশমিক নয়-তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এ সময়ে মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার ৪৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এ সময়ে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারও স্থিতিশীল রয়েছে। সার্বিকভাবে, অনুকূল সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আর্থ-সামাজিক খাতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি বাংলাদেশকে মধ্য-আয়ের দেশে উত্তরণের পথে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

আবদুল হামিদ বলেন, সবার জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বতর্মান সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০০৮-০৯ অর্থ-বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল তিন কোটি ৩৩ লাখ মেট্রিকটন। ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রায় চার কোটি মেট্রিকটনে উন্নীত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে খাদ্যাভাবের ঝুঁকি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিকভাবে পাঁচ মাসের জন্য ১০ লাখ মেট্রিকটনের অধিক খাদ্য-মজুদ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ ব্র্যান্ডিংভুক্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশে গ্রামীণ জনপদের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গত সেপ্টেম্বর থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতিকেজি ১০ টাকা করে কার্ডের মাধ্যমে মাসিক ৩০ কেজি করে চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশীয় শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিল্পনীতি, ২০১৬’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে সময়োপযোগী রপ্তানি নীতি-২০১৫-১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক অবকাঠামো ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন-কাজ এগিয়ে চলেছে। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ এ সেতু যানবাহন পারাপারের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, আট হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে একটি টানেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মোট ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেল গভর্নমেন্ট-টু-গভর্নমেন্ট ভিত্তিতে নির্মাণের লক্ষ্যে একটি চীনা নির্মাণ-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং প্রকল্পটি ইতোমধ্যে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট গত ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন। ২০২০ সাল নাগাদ এ টানেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে যুগোপযোগী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৮৩৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে প্রায় ৮৬ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ - ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’- ব্র্যান্ডিংয়ের কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সবার বিদ্যুৎসুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত ৮ হাজার ২৩২ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ায় বিদ্যুতের মোট স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুতের সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৪৭ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৭ সালের মধ্যে ২ হাজার ৮৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নির্মাণাধীন ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে।

তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের মূলপর্বের নির্মাণকাজের জন্য বাংলাদেশ ও রাশান ফেডারেশনের মধ্যে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর ‘জেনারেল কন্ট্রাক্ট’ স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৩ সাল থেকে এ প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র, শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র’-এই দর্শনকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তর, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনসমূহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখা হয়েছে এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’-এর নির্মাণকাজ ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর নাগাদ স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সর্বশেষ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী দু’টি সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। নারীসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে একটি জাতির ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন ঘটানো এবং নারী উন্নয়নের সফল অভিযাত্রায় বিচক্ষণ নেতৃত্বদানের জন্য ‘ইউএন-উমেন’ প্রধানমন্ত্রীকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম তাকে ‘এজেন্ট অব চেইঞ্জ’ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। দেশ ও জাতির জন্য এ অর্জন এক বিরল সম্মান। প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন এ সম্মাননা অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়েছে। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে, আসুন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’ –বাসস

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :