জীবনযুদ্ধে হার না মানা জগন্নাথের হাফিজুর
হাফিজুর রহমান। শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাত-পা সম্পূর্ণ অচল। তারপরও থেমে নেই তার জীবন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি দিয়ে ভয়কে করেছেন জয়। জীবনযুদ্ধে হার না মানা এই তরুণ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তর করছেন। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর ইচ্ছা পড়াশোনা শেষ করে তিনি কলেজের শিক্ষক হবেন।
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাফিজুরের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ঢাকাটাইমসকে হাফিজুর জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই নানা প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে তাকে বড় হতে হয়েছে। কিন্তু সব বাঁধাকেই তিনি সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন।
বরগুনার ছেলে হাফিজুর জানান, বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বেয়ারিংয়ের গাড়িতে চেপে শুরু হয় তার শিক্ষাজীবনের পথচলা। এভাবেই ২০০৯ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৪.১৯ আর ২০১১ সালে এইচএসসিতে জিপিএ ৩.৬০ পেয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি।
কোনো প্রকার কোচিং ছাড়াই ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হন হাফিজুর। সেখান থেকে স্নাতক পাস করেন। তিনি এখন স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
পড়াশোনার খরচ চালাতে বেশ কষ্ট সহ্য করতে হয় তাকে। কিন্তু তাতেও নিজের স্বপ্নকে মরতে দেননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাঁধে তুলে নেন কাগজ-কলম ব্যাগ বিক্রির কাজ। এখনো নিজ উদ্যোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিথ ব্যাগ বিক্রি করে কোনোমতে পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন হাফিজুর।
হাফিজুর বলেন, ‘আসলে জীবন অনেক কঠিন। মাঝে মধ্যে মনে হয় আর পারছি না। তারপরও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখি। পড়াশোনা শেষ করে কলেজের শিক্ষক হতে চাই।’
১৯৯৩ সালে বগুড়া জেলার ধুনট থানার বেলকুচি গ্রামে জন্ম নেন হাফিজুর । বাবা হাফিজুদ্দিন একজন কৃষক। মা ফিরোজা বেগম গৃহিণী। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/টিআই/জেডএ)