সমস্যায় ভারাক্রান্ত ফতুল্লা বিসিক, ক্ষোভ

মাসুদুল হাসান রনি, নারায়ণগঞ্জ থেকে
 | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:১৮

নারায়াণগঞ্জের নিট গার্মেন্টস পল্লী ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীর অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটের সংস্কারহীন বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গার্মেন্টস মালিকরা। তারা জানান, প্রতিবছর এ শিল্প এলাকা থেকে সরকার তিন কোটি টাকার বেশি রাজস্ব নিলেও বছরের পর বছর ধরে বিসিকের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিল্প মালিকরা। তারা অভিযোগ করেন, এখানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই, ড্রেনেজ ব্যবস্থা বিধ্বস্তসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভারাক্রান্ত বিসিক শিল্প নগরী।

ঢাকাটাইমসের এ প্রতিবেদক সরেজমিনে পঞ্চবটি থেকে শাসনগাঁও পর্যন্ত বিসিক শিল্পনগরী ঘুরে ঘুরে দেখেন। বিসিকের ১নং গেইট দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায় রাস্তার বিভিন্ন অংশে খানাখন্দক। ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে আছে। অথচ এ পথে প্রতিদিন বিভিন্ন গার্মেন্টসের শিপমেন্টের অসংখ্য কাভার্ডভ্যান যাতায়াত করে এবং প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

এখানে নিয়মিত কর পরিশোধ করলেও পানি, সংস্কারহীন ড্রেন ও বেহাল সড়কের কারণে এ নগরীতে কর্মরত দুই লাখেরও বেশি সাধারণ শ্রমিকের অবস্থা খুবই শোচনীয়। গার্মেন্টস মালিকদের অভিযোগের অন্ত নেই বিসিকের ফতুল্লা শাখার প্রতি। একই সাথে তাদের অভিযোগ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির প্রতিও।

ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৫নং সাব কমিটি বিসিক শিল্প নগরী পরিদর্শন করেছেন। গার্মেন্টস মালিকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিক কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে এ নগরীর উন্নয়ন করতে পারছেন না তারা।

এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিসিক নগরীর উন্নয়ন করবে বিসিক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাদের কাছে বিভিন্ন সময় বিসিক শিল্প মালিক সমিতি দাবি জানালেও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, সরকার ফতুল্লা অঞ্চল থেকে প্রতি বছর তিন কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব পায়। অথচ দেশের অন্যান্য বিসিকে সরকারের উল্টো ভর্তুকি দিতে হয়। তারপরেও ফতুল্লার এ বিসিক শিল্প এলাকায় রাস্তাঘাট, ড্রেনেজব্যবস্থা বিধ্বস্ত।

বাংলাদেশে হোসিয়ারী এসোসিশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল ঢাকাটাইমসকে বলেন, এলাকার শিল্প কারখানা বিসিকের আওতাধীন। কিন্তু বিসিকের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদকেও কর পরিশোধ করতে হচ্ছে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের। দুই স্থানে নয়, বিসিকের মাধ্যমেই কর পরিশোধ করতে চায় আমাদের ব্যবসায়ীরা। যদি ইউনিয়ন পরিষদকে কিছু দেয়ার থাকে তাহলে সেটা বুঝবে বিসিক কর্তৃপক্ষ।

তাদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল মান্নান ঢাকাটাইমসকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার জন্য এ শিল্প এলাকার ব্যবসায়ীদের চাহিদানুযায়ী সেবা দিতে পারছি না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্য সব বিসিক শিল্পনগরীর মতোই এ শিল্প নগরীর প্লান করা হয়েছিল। কিন্তু এখানকার উদ্যোক্তারা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নির্মাণ করায় প্রয়োজনীয় সেবা চাহিদার তুলনায় খুবই কম হয়ে গেছে। সেখানে বর্তমানে বৃহত্তম প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে প্লানিং নিয়ে নতুন করে কাজ করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গার্মেন্টস মালিক বলেন, বিসিকের সব গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান বিকেএমইএ’র সদস্য। কিন্তু আমাদের বাধ্য করা হয়েছে বিসিক শিল্প মালিক সমিতি নামে আলাদা সংগঠনের সদস্য হতে। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের নামে প্রতি মাসে আমাদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। অথচ উন্নয়নের কিছু হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, কাউকে আমরা বাধ্য করিনি। নিজেদের স্বার্থেই মালিকরা সংগঠন গড়েছেন। এখানকার উন্নয়ন করবে বিসিক কর্তৃপক্ষ।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এমএইচআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :