পোকায় খাচ্ছে সাড়ে তিন কোটি টাকার সরকারি গম

সৈয়দ মাহফুজ রহমান, পিরোজপুর থেকে
 | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:২৭

পিরোজপুরে পোকায় খাচ্ছে সরকারের সাড়ে তিন কোটি টাকার গম। জেলার বিভিন্ন খাদ্যগুদামে পড়ে থাকা প্রায় দেড় বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদের রক্ষিত এক হাজার ২১০ মেট্রিক টন পোকায় খাওয়া গম নিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ। যার বর্তমান মূল্য তিন কোটি ৫০ লাখ টাকারও অধিক।

উপজেলা পর্যায়ে রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং নতুন কোনো প্রকল্প না থাকায় মজুদকৃত গম ব্যবহার না হওয়ার ফলে সময় যত গড়াচ্ছে গমের মানও নিম্নমুখী হচ্ছে। ইতোমধ্যে গোডাউনেই বেশির ভাগ গম পোকায় খেয়ে ফেলেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ গম অপসারণ করা না হলে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

জেলা খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক শুভাস চন্দ্র পাল বিষয়টি অস্বীকার করে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ১৮ জানুয়ারি কাউখালী উপজেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেছি, সেই গুদামে রাখা গমে পোকা নেই।

গুদামে নষ্ট গম এলো কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাহাজে করে যখন আনা হয় তখন কিছুটা পানিতে ভিজতে পারে। তবে সে ভেজা গম আমরা শুকিয়ে সংরক্ষণ করি।’ জেলার কোনো সরকারি গুদামে পোকায় খাওয়া গম নেই বলে তিনি দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘২০১৫ সালের অক্টোবরে ব্রাজিল ও আর্জেটিনার পোকায় খাওয়া গম আমদানি নিয়ে যখন হইচই পড়ে যায় সেই সময় আর্জেটিনার গম বলে এ গমগুলো খাদ্য গুদামে রাখা হয়। তাই এই গম এতো অল্প সময়ে পোকায় ধরে পাউডার করে ফেলছে। এছাড়া, সময়মতো সরকারিভাবে পোকা প্রতিশোধক সরবরাহ না করায় আরও বেশি পোকায় আক্রমণ করে গম নষ্ট করে ফেলছে।’

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার আটটি গুদামের মধ্যে ছয়টি গুদামে মোট এক হাজার ২১০ মেট্রিক টন গম রয়েছে। যার মধ্যে কাউখালী উপজেলায় ২০৭ মেট্রিক টন, নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠীতে ১৮১ মেট্রিক টন, মঠবাড়িয়া উপজেলায় ১৭৬ মেট্রিক টন ও তুষখালীতে ২৮০ মেট্রিক টন, ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় ২৫৩ মেট্রিক টন এবং নেছারাবাদ উপজেলার ইন্দেরহাট গুদামে ১১৩ মেট্রিক টনসহ মোট ১২১০ মেট্রিকটন গম রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য টন প্রতি ২৮ হাজার ৯৯৪ টাকা হিসেবে তিন কোটি ৫০ লাখ ৮২ হাজার ৭৪০ টাকা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনোতোষ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং নতুন কোনো প্রকল্প না থাকায় মজুদকৃত গম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া গমগুলো নিম্নমানের বিধায় পোকা প্রতিষেধক ওষুধ ব্যবহার করেও পোকা নিধন করা যাচ্ছে না। তবে অপর এক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমাসে ইপি খাতে ৩০ মেট্রিক টন গম নেয়া হয়।

শিগগির এ গমগুলো ব্যবহার করা না হলে পোকায় সব গম খাদ্যের অনুপযোগী করে ফেলবে বলে জানান মনোতোষ কুমার মজুমদার।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :